কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সাদি মহম্মদ কেন পদকের জন্য আত্মহত্যা করতে যাবেন

প্রথম আলো রতন সরকার প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৪, ২০:০৪

তখন আমি বানারসে। বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি, উত্তর প্রদেশ, ভারত। এমএফএ করছিলাম। এক অসাধারণ মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে। মহানায়েক। তাঁর পুরো নামটা এখন আর ঠিক মনে করতে পারি না। কী যেন মহানায়েক। ছেলেটি ল ডিপার্টমেন্টে পড়তেন। আমাদের ভিজ্যুয়াল আর্টস ফ্যাকাল্টিতে প্রায়ই আসতেন। বিনোদ সিং স্যারের সঙ্গে ভাস্কর্য বিভাগে বেশির ভাগ সময় বসে আড্ডা দিতেন।


বিনোদ সিং স্যার ছিলেন আরেকজন অসাধারণ মানুষ। অধিকাংশ সময় ছাত্রদের নিয়ে ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন জায়গা, ফ্যাকাল্টির বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার করতেন এবং গাছ লাগাতে খুব পছন্দ করতেন। মহানায়েকজিও গাছ খুব পছন্দ করতেন। ইউনিভার্সিটিতে প্রায় তিন হাজার গাছের চারা লাগিয়েছিলেন এই মহানায়েকজি। তাঁর এই কৃতিত্বের পুরস্কারস্বরূপ উপাচার্য থেকে ‘গ্রিন বয়’ উপাধি দিয়েছিলেন।


একদিন বিনোদ সিং স্যার, মহানায়েকজি এবং আরও কয়েকজন ছাত্র মিলে পাথরের ওপর বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলেন। কাজে বিরতি দিয়ে আমিও সেখানে যোগ দিলাম। তখন স্বাচ্ছন্দ্যে হিন্দি বলতে শিখিনি, তাই শুনতাম বেশি, বলতাম কম।


মহানায়েক জি বলছেন, ‘স্যার আমি ল ডিপার্টমেন্টের ছাত্র হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটা ফ্যাকাল্টিতে আমি খুব যাই। আপনাদের ভিজ্যুয়াল আর্টস ফ্যাকাল্টিতে আসি। মিউজিক ফ্যাকাল্টি আর অ্যাগ্রিকালচার ফ্যাকাল্টিতে যাই। এই যে আপনাদের এখানের ছাত্ররা পাথর কাটছে সারা দিন ধরে কষ্ট করে, তারপর একটা অবয়ব দিচ্ছে, একটা মূর্তি বানাচ্ছে, এর মধ্যে একটা সৃষ্টির আনন্দ আছে স্যার। আবার মিউজিক ফ্যাকাল্টিতে যখন যাই তখন দেখি, ওরা গান বাঁধে সুর দেয়, গান গায়, শত হতাশার মধ্যেও একটা সৃষ্টির আনন্দ আছে। আবার অ্যাগ্রিকালচার ফ্যাকাল্টিতে যখন যাই, তখন দেখি গবেষণা করছে, বীজ বপন করছে, অঙ্কুরিত হচ্ছে, গাছ হচ্ছে, ফুল হচ্ছে, ফল হচ্ছে—সবকিছু মিলিয়ে একধরনের আনন্দ এই শিক্ষার মধ্যে আছে। হতাশা কমবেশি সবারই আছে। হতাশা থাকবেই, তারপরও এই কাজের যে আনন্দ স্যার, এটা আপনাদের এই তিনটা ফ্যাকাল্টিতে আমি পাই।’


ক্যাম্পাসে মাঝেমধ্যেই দেখা হতো মহানায়েকজির সঙ্গে। কখনো কখনো সকালবেলা সুইমিংপুলে, চায়ের দোকানে, গঙ্গার ঘাটে। এক কথা দুকথা হতে হতে একধরনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল আমার মহানায়েকজির সঙ্গে। মাঝে মাঝে আমার ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলে আসতেন। একসঙ্গে ডাইনিংয়ে খেতাম। সময় থাকলে আড্ডা হতো এখানে–সেখানে।


২০০০ সাল। সে বছর ‘ভারত রত্ন’ উপাধি দেওয়া হলো সানাই বাদক ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খাঁ এবং কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরকে। সেই সময় প্রথম মহানায়েকজির কাছেই জানলাম ভারতের সবচেয়ে বড় তিনটি উপাধির নাম—ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ ও পদ্মশ্রী।


আমি মহানায়েকজিকে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘আচ্ছা, রবীন্দ্রনাথকে কি ভারত সরকার ভারতরত্ন উপাধি দিয়েছে?’


মহানায়েকজি বলেছিলেন, ‘দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মহাত্মা গান্ধী—তাঁরা এতই বড় মানুষ যে তাঁদেরকে যত বড় উপাধিই দেওয়া হোক না কেন, উপাধি ছোট হয়ে যাবে আর মানুষ বড় হয়ে যাবে। মানুষকে উপাধি দেওয়া হয় কেন? ছোট মানুষকে উপাধি দিয়ে বড় করার জন্য? কিন্তু রবীন্দ্রনাথ বা মহাত্মা গান্ধী এতই বড় মানুষ যে তাঁর নামের আগে যত বড় উপাধি আপনি দেন, মানুষের চাইতে উপাধি ছোট হয়ে যাবে।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও