নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাস্থ্য খাতের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে করণীয়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল সবার জানা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাস্থ্যের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করাই সমীচীন। এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাস্থ্য খাতের পরিবর্তনে ১০ দফা অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে যা নিম্নরূপ—
(১) ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে একটি ইউনিক হেলথ আইডি প্রদান এবং হাসপাতাল অটোমেশন ব্যবস্থা চালু করা হবে।
(২) সব নাগরিকদের একই রকম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা এবং আন্তর্জাতিক মানের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন করা হবে।
(৩) স্বাস্থ্য বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
(৪) স্বাস্থ্য ব্যয় সহজ করার জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করা হবে।
(৫) হেলথি এজিং স্কিমের আওতায় প্রবীণদের অসংক্রামক রোগ-ব্যাধি নিরাময় এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করা হবে।
(৬) সম্ভাব্য মহামারি, অতিমারি মোকাবিলার জন্য দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে সব যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে প্রস্তুত রাখা হবে এবং বিভাগীয় শহরে উন্নত মানের ল্যাবরেটরি স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
(৭) ভ্যাকসিন আবিষ্কারে শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমূহ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের যৌথ উদ্যোগকে সরকার উৎসাহ ও সহায়তা দেবে।
(৮) ভ্যাকসিন উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের টিকা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
(৯) মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ফলে ওষুধ শিল্প যাতে মেধাস্বত্বের বাধা অতিক্রম করতে পারে, তার জন্য দেশে এপিই (একটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট) শিল্প উৎসাহিত করা হবে এবং দেশে উৎপাদিত এপিই ব্যবহারের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।
(১০) সব স্তরের মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান অধিকতর কার্যকর করা হবে।
এই অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে একদিকে যেমন ইউনিক হেলথ আইডি'র প্রচলন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি চালু এবং স্বাস্থ্য বীমা প্রচলনসহ হেলথ সিস্টেম পরিবর্তনের কিছু সুর ব্যক্ত হয়েছে, অন্যদিকে, টিকা উৎপাদনসহ মহামারি মোকাবিলা, প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শহরে সরকারিভাবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রচলন এবং গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন বিষয়ে কোনো অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়নি।