নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। কোথাও কোথাও এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে রণহুংকার দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, সশস্ত্র হামলাও চালাচ্ছে। প্রতিপক্ষের হাতে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অর্ধশতাধিক নির্বাচনী আসনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত দুই দিনেই ২৫টি হামলার খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, শনিবার ভোরে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাটাবালি এলাকায় এসকেন্দার খাঁ (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের সমর্থক ছিলেন।
এসকেন্দার খাঁর ছেলে মিলন খাঁ বলেছেন, ‘আমার বাবা তাহমিনা বেগমের ঈগল মার্কার সমর্থক ছিলেন। তাঁকে নৌকার সমর্থকেরা হত্যা করেছে।’ এর আগে নৌকার সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল বের করলে প্রতিপক্ষ ককটেল হামলা চালায়। উল্লেখ্য, এখানে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তাহমিনা বেগম, তিনিও বর্তমান সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য।
এর আগে ১০ ডিসেম্বর পিরোজপুর সদর উপজেলার বটতলা এলাকায় নৌকার সমর্থকদের হামলায় নিহত হন লালন ফকির (২৭) নামের এক যুবক। তিনি একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম আউয়ালের সমর্থক ছিলেন। নৌকার প্রার্থী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনা শুধু নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন নয়, ফৌজদারি অপরাধও। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ঘটনা ঘটার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। যখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকেরা একে অপরের ওপর হামলে পড়ছে, তখন নির্বাচন কমিশনের পদাধিকারীরা ভোটের দিনের কারচুপি নিয়ে আগাম সতর্কবাণী উচ্চারণ করছেন। কিন্তু ভোটের আগে যে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হচ্ছে, নিরীহ মানুষ হতাহত হচ্ছে, সেসব বন্ধে কি তাঁদের কিছু করার নেই?