যুক্ত বিশ্বে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

বণিক বার্তা পাপলু রহমান প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১০

আধুনিক বিশ্বে কোনো দেশই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। টিকে থাকার প্রয়োজনে এক দেশ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। নিজেদের স্বার্থে দেশগুলো জোটও গঠন করে। এর পেছনে থাকে বাণিজ্য ও রাজনীতি। সে কারণে বৈদেশিক বিভিন্ন ঋণ, বিনিয়োগ ও সহযোগিতা আসে। 


স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ, বিনিয়োগ ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রয়েছে। বরং দেশের বৈদেশিক সম্পর্ক সম্প্রসারিত হয়েছে ও বাণিজ্য আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব ও এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতিগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে প্রায় সব বড় অর্থনীতির দেশের সঙ্গেই রয়েছে বাংলাদেশের কারবার। দেশের রফতানি পণ্যের দুটি প্রধান গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশের মোট আমদানির সবচেয়ে বেশি আসে চীন থেকে। দুই নম্বরে রয়েছে ভারত। এরপর সবচেয়ে বেশি আমদানি পণ্য আসে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। 


বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। এফডিআইয়ের উৎস হিসেবে পিছিয়ে রয়েছে চীন, ভারত ও রাশিয়া। তবে দ্বিপক্ষীয় প্রকল্পে ঋণ দেয়া ও বাস্তবায়নে তারা এগিয়ে রয়েছে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সবচেয়ে বড় অংশীদার চীন। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেস ও কর্ণফুলী টানেলসহ বেশকিছু অবকাঠামো নির্মাণে দেশটির অর্থায়ন রয়েছে। আবার, ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সবচেয়ে বড় ঋণগ্রহীতা এখন বাংলাদেশ। রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মাণ হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়া থেকে ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলার ঋণ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঋণ ও সহযোগিতা দেয়ার তালিকায় উল্লেখযোগ্য অবস্থানে রয়েছে জাপানও। বিগ বি কৌশলের আওতায় মাতারবাড়ীতে জাপান বড় বিনিয়োগ করেছে। 


রফতানি পণ্য ও এফডিআইয়ের উৎস হিসেবে এগিয়ে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউ বাংলাদেশকে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। দেশের সুবিধাবঞ্চিত, বস্তিবাসী ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এসব দেশ অর্থ ব্যয় করে। কভিড মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রায় ১১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে বিনা মূল্যে দিয়েছিল।


আমদানি, রফতানি, বিনিয়োগ ও সহযোগিতা ছাড়াও দেশের অর্থনীতির জন্য আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও যুক্তরাজ্যের ওপর। অর্থনৈতিক অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে শিক্ষা ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের বড় সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি বছর দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এসব দেশে পড়তে যান। তাদের অনেকেই সেখানে থেকে গিয়ে প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখেন। 


যুক্ত বিশ্বে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিকাশে উন্নত দেশগুলো অবদান রাখে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ‘‌নির্ভরশীলতা’ উন্নয়নমূলক সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী এ জি ফ্রাংকের নির্ভরশীলতা তত্ত্ব রয়েছে। তার দাবি, পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এসব দেশের ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আসার অর্থ হলো ক্রমাগত অনুন্নয়ন। আরেক সমাজবিজ্ঞানী জন জে ম্যাকিওনিসের মতে, ‘‌নির্ভরশীলতা তত্ত্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের একটি মডেল, এর মাধ্যমে ধনী দেশগুলো ঐতিহাসিকভাবে গরিব দেশগুলোকে শোষণ করে এবং বৈশ্বিক অসমতাকে স্পষ্ট করে। দস সান্তোসের ভাষায়, ‘‌নির্ভরশীলতা এমন এক ধরনের নিয়ন্ত্রণকারী অবস্থা, যেখানে একই গ্রুপভুক্ত দেশের অর্থনীতি অন্যান্য দেশের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও