ঢাকায় হারাতে বসেছে দূষিত বায়ু পরিশোধনে কার্যকর বটবৃক্ষ
পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি ঢাকা, যার বড় সমস্যা বায়ুদূষণ। বর্ষা ছাড়া বছরের প্রায় দিনই ঢাকার অবস্থান থাকে দূষিত শহরের শীর্ষে। এর মধ্যেই শ্বাস-প্রশ্বাস টেনে জীবন কাটাচ্ছে মেগাসিটির মানুষ। তবে এ বায়ু পরিশোধনের সহজ সমাধান হতে পারে মহীরুহ বৃক্ষ বট। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বড় ও ঘন পাতার সাহায্যে বটগাছ বাতাসে ভেসে বেড়ানো ভারী ধাতু সহজেই ধরে রাখতে পারে। দূষণ পরিশোধনেও বেশ পটু। যদিও বেড়ে ওঠা অপরিকল্পিত নগরী ঢাকার বুক থেকে আজ হারাতে বসেছে বাংলার এ আদিবৃক্ষটি।
ঢাকার ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণে উদ্ভিদের টিকে থাকার ওপর একটি গবেষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে সিসা, ক্রোমিয়াম, নিকেল ও ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি অনেক বেশি। এসব ভারী ধাতু শোষণ ও পরিশোধনে গাছের সক্ষমতার বিষয়টিও গবেষণায় উঠে এসেছে। চারটি ভিন্ন জায়গা থেকে চারটি গাছের নমুনা নিয়ে গবেষকরা এ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
গবেষক দলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক সাইফ শাহরুখ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকার চারটি লোকেশন থেকে চারটি গাছের নমুনা নিই। ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ফার্মগেট ও গাবতলী থেকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি লোকেশন থেকেই চারটি গাছের নমুনা নেয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, ঢাকার দূষণের ধরনের আলোকে আম ও বট সবচেয়ে বেশি দূষণ সহনীয় বৃক্ষ।’
গবেষকরা জানান, শহুরে গাছগুলো পাতার উপরিভাগে ধূলিকণা জমিয়ে রেখে বায়ুমণ্ডল থেকে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) অপসারণের মাধ্যমে বায়ুর গুণমান উন্নত করতে সক্ষম। সাইফ শাহরুখ বলেন, ‘আমাদের গবেষণাটির প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বায়ুদূষণের শিকার রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতি বৃক্ষের স্থিতিস্থাপকতা মূল্যায়ন করা। অত্যন্ত দূষিত পরিবেশে কোন গাছ বেশি সহনশীল, তা খুঁজে বের করতে চেয়েছি। তাতে দেখা যায়, শহুরে বন উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত উদ্ভিদ বট।’