কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সর্বাবস্থায় নিশ্চিত করতে হবে খাদ্য নিরাপত্তা

যুগান্তর মো. আবদুল লতিফ মন্ডল প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৬

সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনে বলা হয়েছে, করোনার কারণে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন বা ২৮ লাখ মানুষ। ২০২২ সালের হিসাবে দারিদ্র্য বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে এই করোনা মহামারি। একই বছরে বৈশ্বিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অনেক পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয় সরাসরি বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বৈশ্বিক মন্দা দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। শুধু বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাড়তি ৫০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন ঘিরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন নিষেধাজ্ঞা দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে (যুগান্তর, ৯ ডিসেম্বর)। খাদ্য নিরাপত্তার সংজ্ঞা ও উপাদান, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলো এবং এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী করণীয়, তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।


খাদ্য নিরাপত্তার সংজ্ঞা অনুযায়ী, তখনই খাদ্য নিরাপত্তা বিরাজমান, যখন সবার একটি কর্মক্ষম, স্বাস্থ্যকর ও উৎপাদনমুখী জীবনযাপনের জন্য সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের লভ্যতা ও প্রাপ্তির ক্ষমতা বিদ্যমান থাকে। বাংলাদেশের জাতীয় খাদ্যনীতি ২০০৬-এ বলা হয়েছে, খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম একটি উপাদান হলো জাতীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যের লভ্যতা (availability of food)। অপর অপরিহার্য উপাদান হলো, ব্যক্তি ও পরিবার পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যপ্রাপ্তির ক্ষমতা (access to food)। খাদ্য নিরাপত্তার তৃতীয় অপরিহার্য উপাদন হলো খাদ্যের জৈবিক ব্যবহার (utilisation of food)।


দেশে খাদ্য লভ্যতার মূল উৎস হলো কৃষি খাতে (শস্য উপখাত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপখাত এবং বন উপখাত নিয়ে কৃষি খাত গঠিত) উৎপাদিত খাদ্যপণ্য। উপর্যুক্ত সম্মেলনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে দেশের কৃষি খাতে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কৃষি খাতের ৬.৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে পরবর্তী এক দশকে গড়ে ৩.৭ শতাংশে দাঁড়ায় (অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা ২০১৯-২০)। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩-এ বলা হয়েছে, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.১৭ শতাংশ, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৩.০৫ শতাংশে। সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ২.৬১ শতাংশে।’ কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হ্রাসের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শস্য উপখাতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফসল ধান তথা চালের ওপর। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) তথ্য মোতাবেক ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত চাল উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধি হার ছিল ১ শতাংশ। এদিকে ২০২০ ও ২০২১ সালে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ১.৩৭ ও ১.৩ শতাংশ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২২ ও ২০২৩)। এর অর্থ দাঁড়ায়, চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের চেয়ে কম। এতে চাহিদার তুলনায় চালের ঘাটতি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। খাদ্য লভ্যতার অন্য উৎসটি হলো আমদানি।


প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক দেশের চাহিদা মেটাতে ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে যথাক্রমে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার, ৯ লাখ ৮৭ হাজার এবং ১০ লাখ ৫৫ হাজার টন চাল আমদানি করতে হয়। বোরোর আশানুরূপ উৎপাদন এবং চলতি আমন মৌসুমে ভালো ফলনের আশায় ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাল আমদানি না করার সরকারি সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশা করছে, এবার আমন উৎপাদন দাঁড়াবে ১ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা লক্ষ্যমাত্রার (১ কোটি ৬৩ লাখ টন) চেয়ে ৭ লাখ টন বেশি। অন্যদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সময়মতো প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের অভাবে এবার আমন উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি ৪০ লাখ টনে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিতব্য হিসাবে জানা যাবে এ বছর আমন উৎপাদনের প্রকৃত পরিমাণ। তবে অতীতের উদাহরণ থেকে অনেকটা জোর দিয়ে বলা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবের সঙ্গে বিবিএসের হিসাবের তারতম্য ঘটবে অর্থাৎ বিবিএসের হিসাবে আমনের উৎপাদন হ্রাস পাবে। এদিকে আমনের ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের দাম। টিসিবির বরাত দিয়ে ডেইলি স্টারের ১ ডিসেম্বরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে চালের দাম ২ থেকে ৫.৬১ শতাংশ বেড়েছে। চাল আমদানি না করা হলে মার্চে দেশে চালের মজুত উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সরকারের উচিত হবে জরুরিভিত্তিতে একটি জরিপের মাধ্যমে নির্ধারণ করা মার্চ ও এপ্রিলে কী পরিমাণ চাল আমদানি প্রয়োজন হতে পারে এবং তদনুযায়ী চাল আমদানির পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও