বাংলাদেশ নিয়ে চীন-ভারতের হিসাব-নিকাশ কী দাঁড়াল
গত ২৬ জুন প্রথম আলোয় একটি লেখা লিখেছিলাম। শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের ব্রিকসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক, না রাজনৈতিক?’ ব্রিকসে যাওয়ার এ সিদ্ধান্তের ফলাফল কী, তা আমরা এরই মধ্যে জেনে গেছি; ছয়টি দেশকে সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে, বাদ পড়েছে বাংলাদেশ।
অনেকটা আকস্মিকভাবেই ব্রিকসের সদস্য হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্রিকসে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিকভাবে খুব সুবিধা পাবে, এমন আশার কথা আমরা কারও কাছ থেকে শুনিনি। এবং তখন এটা অনেকটাই পরিষ্কার ছিল যে ‘রাজনৈতিক’ কারণেই এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ‘রাজনৈতিক’ কারণটি হচ্ছে বাংলাদেশের সামনের নির্বাচন।
আমরা চাই বা না চাই, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি জড়িয়ে-পেঁচিয়ে গেছে। সেদিক থেকে দেখলে বাংলাদেশের এ সিদ্ধান্তের পেছনে শুধু ‘রাজনৈতিক’ নয়, ‘ভূরাজনৈতিক’ বিবেচনাও কাজ করেছে। বাংলাদেশের ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত যে পশ্চিমারা ভালোভাবে নেবে না, তা সরকারের অজানা নয়। বাংলাদেশ সম্ভবত মনে করেছে, ব্রিকসের সদস্য হলে ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে নিজেদের গুরুত্ব বাড়বে এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের বিরুদ্ধে পাল্টা একটি অবস্থান নেওয়া হবে।
আর ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনের উৎসাহ ও সমর্থনও সম্ভবত বাংলাদেশকে প্রভাবিত করেছে। বাংলাদেশকে যুক্ত করার ব্যাপারে উৎসাহের পেছনে সম্ভবত জোটে নিজের দল ভারী করার বিষয়টি কাজ করেছে। চীন ব্রিকসের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ। চীনের সমর্থনের বিষয়টি মাথায় রেখেই সরকার সম্ভবত ধরেই নিয়েছিল যে ব্রিকসের সদস্যপদ তারা পাবে। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবেদন করা ছাড়া সদস্যপদ পাওয়ার জন্য কূটনৈতিকভাবে বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি বাংলাদেশ।