দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করিতেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত দৈনন্দিন পরিসংখ্যানেই উহা স্পষ্ট। শনিবার প্রভাত পর্যন্ত সমগ্র দেশে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯৮ সহস্র। এই পর্যন্ত হাসপাতালে প্রাণ হারাইয়াছে ৪৬৬ জন। এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা একাধিকবার বলিয়াছি, বিপুল অধিকাংশ আক্রান্ত যদ্রূপ হাসপাতালের চৌহদ্দিতে যান না; তদ্রূপ হাসপাতালের বাহিরেও ডেঙ্গুতে মৃত অনেক রোগী সরকারি তালিকার অন্তর্ভুক্ত হন না। কিন্তু প্রাপ্ত তালিকাতেই ইহা স্পষ্ট, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও প্রাণহানি এই বৎসর অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করিয়াছে। আমাদের আশঙ্কা, পরিমাপ সম্ভব হইলে দেখা যাইত প্রাণঘাতী হইয়া উঠা এই মশকবাহী রোগ লইয়া সংশ্লিষ্টদের নির্লিপ্ততাও রেকর্ড ভঙ্গ করিতেছে।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি এতটা গুরুতর যে, খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই ব্যাপারে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করিয়াছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর বর্তমান হারকে ‘বিপুল তরঙ্গ’ আখ্যা দিয়া তথায় বলা হইয়াছে যে, বর্তমান পরিস্থিতি দুই দিক দিয়াই অস্বাভাবিক। প্রথমত, মৌসুমগত দিক হইতে এই পর্যায়ে এইরূপ বৃদ্ধির হার অন্যান্য বৎসরের সহিত মিলিতেছে না। দ্বিতীয়ত, আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হারও স্বাভাবিক নহে। বস্তুত বর্ষাকালের পূর্বে পরিচালিত জরিপেও দেখা গিয়াছিল, এই বৎসর এডিস মশকের ঘনত্ব গত পাঁচ বৎসরে সর্বোচ্চ।