আয়াত উল্লাহদের পঙ্গু করার জন্যই ছাত্রলীগের রাজনীতি?
১১ আগস্ট ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢাকা-১২ আসন ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন। এর আগে চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগের বিশেষ কর্মিসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রেমিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রেমিক হবেন, ভালোবাসতে শিখবেন। ছাত্রলীগের কর্মীরা মেয়েদের কাছে প্রেমের চিঠি লিখবেন। একই সঙ্গে যাঁরা মেয়েদের ওপর আঘাত করেন, নিপীড়ন করার চেষ্টা করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানাভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে আমরা শান্তিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারি।’
দুই অনুষ্ঠানেই ছাত্রলীগ সভাপতি যে শান্তিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন, সেই শান্তিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কেন তৈরি হলো না? ছাত্রলীগের ভাষায়, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নিকট অতীতে ক্যাম্পাসে শান্তি বিনষ্ট করেছে, এমন উদাহরণ নেই। ছাত্রলীগ যাদের প্রতিপক্ষ ভাবে, সেই ছাত্রদলও তো ১৪ বছর ধরে ক্যাম্পাসছাড়া। বাম ছাত্রসংগঠনগুলো দুর্বল হতে হতে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে এসেছে। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অশান্তি জিইয়ে রাখছেন কারা? সরকার-সমর্থক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দিই।
ঘটনা-১
১১ আগস্ট সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা প্রবাল চৌধুরীর ওপর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রবাল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁদের তিনজনের মাথায় হেলমেট পরা ছিল। নাঈম ও রাহেলের হাতে দা ছিল।
ঘটনা-২
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসাইন। ৯ আগস্ট বুধবার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি করেন কলেজের নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক ও শিক্ষক সবুজ আহমেদ। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, সম্প্রতি কলেজের হোস্টেলগুলোতে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। কমিটিগুলোকে বরণ করতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলে প্রাক্তন ছাত্র ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বড়ুয়া এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তৌহিদুল ইসলাম আশরাফী গত মঙ্গলবার তাঁর (অধ্যক্ষ) কক্ষে প্রবেশ করে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ টাকা দিতে তিনি রাজি না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরদিন বুধবার বিকেলে আবারও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাঁকে (অধ্যক্ষকে) ফোন করে টাকা দাবি করা হয়। তিনি আবার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁর (অধ্যক্ষ) কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রলীগ।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ছাত্র রাজনীতি
- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ