আমার বাড়ি যাইও ভোমর
বাঘ ছুঁলে কত ঘা আর পুলিশ ছুঁলে কত, এ নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক, বাঘ ঘা দেওয়ার অপবাদ থেকে বেরোতে না পারলেও পুলিশ কিন্তু এবার বেরিয়ে এসেছে। হালে পুলিশি হেফাজতে (হেফাজতকে গ্রেপ্তার এবং কারাবাসের সমার্থক মনে করা সমীচীন হবে না) থেকে উত্তম খানাপিনার যে সচিত্র সংবাদ ছাপামাধ্যম, ইলেকট্রনিক মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যিেম প্রচারিত হয়েছে, তাতে পুলিশদর্শন অচিরেই সৌভাগ্য ও উত্তম আহার লাভের সম্ভাবনার সমার্থক হয়ে উঠতে পারে। হেফাজতের মানে নিরাপত্তা তো হতেই হবে, এর মানে ভাগ্যবানও। খেয়ে কে কবে ভাইরাল হয়েছেন, ভাগ্যবান না হলে কি আর গণমাধ্যম গেস্ট আর হোস্টের প্রতি এত আগ্রহী হয়? এত খাবারের ছবি দেখে আমাদের শৈশবের পাঠ্য জসীম উদ্্দীনের কবিতার কিছু পঙ্্ক্তি মনে পড়েছে। ‘আমার বাড়ি যাইও ভোমর/ বসতে দেব পিঁড়ে/ জলপান যে করতে দেব/ শালি ধানের চিঁড়ে।’
হেফাজতে আসা আমন্ত্রিত অতিথির মনে কীসের ভয় কে জানে, কেন যে একটু একটু করে সব পদ খাননি! উপেক্ষিত খাবারও নাকি কষ্ট পেতে জানে।
কেন খাবেন না? কলকাতা পুলিশের কথা শুনুন : কলকাতার পুলিশ সেকালে ভিন্ন ধরনের এক কল্পিত অপরাধের আশ্রয় নিতেন : ব্যাটা বড্ড বেড়ে গেছে, সাহেব মারার মামলায় ফাঁসিয়ে দে। সাহেব মানে সাদা চামড়ার সাহেব। সাহেব মারা গুরুতর অপরাধ। সরকারি ডাক্তার হরগোবিন্দ চট্টোপাধ্যায়কে পুরোদস্তুর একজন বাঙালি দারোগা (এসআই, দারোগার নিজের ভাষায় এছাই) সাহেব মারার মামলায় সাক্ষ্য দিতে বললে তিনি চটে গেলেন। মিথ্যা সাক্ষ্য তিনি কেন দেবেন?