হেফাজতে আলালের মৃত্যু নিয়ে এত লুকোচুরি কেন
রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকার বাসিন্দা আলাল উদ্দিন ১৬ জুন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মারা যান। র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর মাস তিনেকের মাথায় এবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে মৃত্যু হলো আলাল উদ্দিনের। আলালের মৃত্যুর পর পুলিশ বলছে, তিনি একটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিলেন। পায়ে আঘাত থাকায় পুলিশ তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হলে চিকিৎসক আলালকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে এর বাইরে আরও যেসব প্রশ্ন উঠছে, সেগুলোর কোনো জবাব দিচ্ছে না পুলিশ।
বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ সব ক্ষেত্রে রাখঢাক করে এমন নয়। জঙ্গি দমনে বড় বড় অভিযান শেষে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মাদক ও খোয়া যাওয়া মুঠোফোন উদ্ধার থেকে শুরু করে ‘ক্লুলেস’ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের খবর জানাতেও তারা বেশ তৎপর। পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই, র্যাবসহ কেউ সেখানে পিছিয়ে নেই। কিন্তু আলাল উদ্দিনের ব্যাপারে পুলিশ মুখ খুলছে না।
পত্রিকান্তরে জানা যাচ্ছে, পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে (আলাল) ৬ জুন ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর পাক্কা ১০ দিন তাঁর কোনো খোঁজ ছিল না।
এরপর পরিবারের লোকজনকে পুলিশ ফোন করে আলালের মৃত্যুর খবর দেয়। এ নিয়ে সংবাদপত্রগুলো পুলিশের উত্তরা বিভাগ, ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। কেউই সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ১০ জুন আলালকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়লে আদালতের নির্দেশে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রশ্নের জবাবে এই একই কর্মকর্তা বলেন, ডিবি যখন আলালকে ধরে, তখনই তাঁর ‘পা ভাঙা’ ছিল। পঙ্গু হাসপাতালে পাঁচ-সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার এক পর্যায়ে তাঁর রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যায়। তখন পঙ্গু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠায়।
ডিবির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার আকরামুল হক সমকালকে বলেন, গ্রেপ্তারের সময় কিছুটা অসুস্থ ছিলেন আলাল উদ্দিন। তাঁর পায়ে আঘাত ছিল। সেদিনই আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেন। এরপর তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়।