জেলেনস্কির সামনে এখন দুই বিকল্প

www.ajkerpatrika.com রাজিউল হাসান প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩২

হোয়াইট হাউসে সপ্তাহখানেক আগে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডেরিখ মার্জ, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভনডার লায়েনসহ ইউরোপীয় নেতারা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন না থেকেও যেন মিশেছিলেন হোয়াইট হাউসের প্রতিটা শ্বাসে, প্রতিটা মুহূর্তে। তার প্রমাণ ট্রাম্প নিজেই দিয়েছেন বৈঠকের মধ্যে পুতিনকে টেলিফোন করে।


বৈঠক শেষে ট্রাম্প, জেলেনস্কি, স্টারমার, মার্জ, মাখোঁ—সবাই বলেছেন, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়ে একমত হয়েছেন নেতারা। বৈঠকে প্রথমে পুতিন-জেলেনস্কি দ্বিপক্ষীয় এবং পরে ট্রাম্প-পুতিন-জেলেনস্কি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও জেলেনস্কি দাবি করেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি, তবে কোনো শর্ত সাপেক্ষে নয়। কিন্তু যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, ভলোদিমির জেলেনস্কির সামনে এখন দুই বিকল্প—হয় রাজনৈতিক আত্মহনন, নতুবা নিজ দেশ ও দেশের জনগণকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আরও বেশি রুশ আগ্রাসনের কাছে সঁপে দেওয়া।

জেলেনস্কি ছিলেন কৌতুকাভিনেতা। ২০১৫ সালে তিনি এবং তাঁর সহশিল্পীরা ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ নামের একটি টেলিভিশন সিরিজ শুরু করেন। এতে জেলেনস্কি ত্রিশের কোঠায় থাকা এক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ঘটনাক্রমে এক ভাইরাল (ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া) ভিডিওর জেরে সেই শিক্ষক চলে আসেন রাজনীতিতে, বনে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’-এর সেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকের গল্প যেন ছিল জেলেনস্কিরই ভবিষ্যৎ। তবে গল্প আর বাস্তবতায় সব সময়ই অনেক ফারাক থাকে। সিরিজটি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে সেই জনপ্রিয়তার ঢেউ জেলেনস্কি ও তাঁর সহশিল্পীদের রাজনীতির মহাসমুদ্রে ছিটকে ফেলে। ২০১৮ সালে ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ নামের একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন করেন তাঁরা। তার কয়েক মাস পরই নির্বাচনে বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জেলেনস্কি। তবে সে সময় যদি তিনি জানতেন, ভবিষ্যৎ তাঁর জন্য কী নিয়ে অপেক্ষা করছে, তাহলে হয়তো তিনি রাজনীতির পথেই হাঁটতেন না।


ইউক্রেন একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর ‘পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি’খ্যাত ইউক্রেনের স্বাধীন পথচলা শুরু। তবে এই পথচলা মোটেই সুখকর নয়। কারণ, পরাক্রমশালী রাশিয়ার প্রতিবেশী তারা। মস্কোর সঙ্গে পশ্চিমা বিরোধের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল ইউক্রেন। বিশেষত, জেলেনস্কি ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটে ঢোকার তোড়জোড় শুরু করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় রাশিয়া। এমনিতেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো পরাক্রমশালী হয়ে ওঠার স্বপ্নে বিভোর। তার মধ্যেই ন্যাটোয় যোগ দিয়ে রাশিয়ার দোরগোড়ায় এই সামরিক জোটের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়ে ইউক্রেনের প্রচেষ্টা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। আর এ কারণেই ইউক্রেনের জনগণের ওপর তিন বছরেরও বেশি সময় আগে চাপে এক যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা রাশিয়ার দখলে গেছে।


এই যুদ্ধে শুধুই যে ইউক্রেনের ভূখণ্ড বেদখল হয়েছে, বিপুল প্রাণহানি ঘটেছে, তা কিন্তু নয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পরপরই অভিবাসনের ঢল নামে ইউরোপজুড়ে। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করতে গিয়ে ইউরোপের দেশগুলোকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা দিতে হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি তহবিল ও সমরাস্ত্র সহযোগিতা গেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এই যুদ্ধ এমন সময় শুরু হয়েছে, যখন সবে কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে পুনরায় জাগতে শুরু করেছে বিশ্ব। কাজেই নাজুক বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রচণ্ড আঘাত করেছে এই যুদ্ধ। এবং যুদ্ধ শুরুর তিন বছরেরও বেশি সময় পর এসে এখন অনেকটাই যুদ্ধজনিত অবসন্নতায় ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা। এই যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের তোড়জোড়ের পেছনে এটাও একটি কারণ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও