নতুন আয়কর আইন শিরে অসম্মানভার
গত সোমবার ২৩ জানুয়ারি আয়কর আইন-২০২৩-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই আইনের ফলে আয়কর নির্ধারণে কর্মকর্তার ক্ষমতা কিছুটা কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রদান আরও সহজ করা হবে। ব্যবসায়ীদের আয়কর নির্ধারণে আগে ২৯টি বিষয় মানদ- ছিল। এখন তা কমিয়ে ১২টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। মানুষ যাতে ট্যাক্স দিতে উৎসাহিত হন এবং ট্যাক্সের পরিধি যাতে বাড়ে সেজন্য এই আইনটি করা হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, করদাতার করের পরিমাণ আয়কর কর্মকর্তার নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকছে না এই আইনে। করদাতার দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই কর নির্ধারিত হবে। ফলে কর্মকর্তার চাপিয়ে দেওয়া করের পরিমাণ ঠিক করার ফলে আপিলের পরিমাণ কমবে, কমবে করদাতার হয়রানি।
বাংলাদেশের আয়কর আইনের যদি সুরতহাল রিপোর্ট করা যায় তাহলে বিদ্যমান আয়কর আইনটি জন্মগতভাবে ব্রিটিশ, দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে ঔপনিবেশিক এবং প্রায়োগিক দিক থেকে এখনো নিবর্তন ও প্রতিরোধাত্মক প্রতীয়মান হয়। এ দেশে ভূমি কর বা রাজস্ব আদায়ের প্রথা প্রাগৈতিহাসিক আমল থেকে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রদান, বিভিন্ন সেবার বিনিময়, কিংবা উৎপাদন বা সম্পদ ব্যবহার বাবদ নানান নামে নানান উপায়ে রাজস্ব বা টোল বা ট্যাক্স আদায়ের প্রথা সেই আদি যুগ থেকে চলে এলেও আধুনিক আয়কর বলতে যে বিশেষ কর রাজস্বের সঙ্গে আমরা পরিচিত, এ দেশে তথা ভারতীয় উপমহাদেশে তার প্রবর্তন ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে, সাত সাগর তেরো নদীর পাড় থেকে আসা বিদেশি বেনিয়াদের দ্বারা। তাদের তৎকালীন সমাজে শিল্পবিপ্লবের পর পুঁজির প্রসার ঘটে এবং সেখানে সম্পদের ওপর, সম্পদ সৃষ্টি ও বিনিময় প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত আয় অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্র ওই অতিরিক্ত আয়ের ওপর একটা হিস্যা দাবি করে বসে, যুক্তি এই, তুমি রাষ্ট্রের তৈরি অবকাঠামো ব্যবহার করে আয়-উপার্জন করছো, রাষ্ট্রের সেবা ও সুবিধা ভোগ করে লাভবান হচ্ছো সুতরাং এসব অবকাঠামো নির্মাণ, এসব সুযোগ-সুবিধার সমাহার বাবদ রাষ্ট্রের বিনিয়োগে তোমার অংশগ্রহণ চাই।
- ট্যাগ:
- মতামত
- আয়কর মেলা
- আয়কর বিবরণী
- আয়কর
- আয়কর ফাঁকি