কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সত্যপ্রবাহ পালাচ্ছে, শৈত্যপ্রবাহ আসছে!

প্রথম আলো আনিসুল হক প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৪

অভিযোগ করা হলো আমাদের স্বভাব। আমাদের কিছুই ভালো লাগে না। ভালো হলে বলি, ভালো, তবে আরেকটু ভালো হলে আরেকটু ভালো হতো! তা তো বটেই। আরও ভালো হলে যে আরও ভালো হতো, সে সত্য তো এই বাক্যের মধ্যেই নিহিত। ফেসবুকে দেখলাম, এক নার্সারি গ্রুপের বাচ্চা, পাঁচ সাবজেক্টের চারটায় পেয়েছে ১০০-তে ১০০, একটায় ৯৯। শিক্ষক মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, আরও ভালো করতে হবে। জানি না, বাচ্চা ৫টাতেই এক শতে ১০০ করে ৫০০ পেলে শিক্ষক কী লিখতেন, আরও ভালো করো, ১০০-তে ১১০ নয় কেন?


তো, ডিসেম্বরের মধ্যভাগে যখন পৌষ মাস এসে গেল, ঋতু হিসেবে এসে গেল শীত, তখন ঢাকাবাসীর অভিযোগ ভীষণ, আক্ষেপ তীব্র শীত পড়ে না কেন! শীতের রঙিন কাপড়চোপড়, কোট কিংবা কার্ডিগান, পশমি শাল কিংবা শাড়ি কবে বের করব, কবে পরব? শীতের দিনে শীত পড়বে না, এ কেমন কথা? সব গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের দোষ! কথাতে যে সত্যতা নেই, তা নয়। শীতকালে শীত পড়বে, বসন্তকালে বইবে দখিনা বাতাস, ডেকে উঠবে কোকিল; হেমন্তে ধানকাটা হয়ে গেলে খড়কুটো উড়বে, কিন্তু ঘাসের ডগায় জমবে শিশির, বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে—এই তো চিরকাল ঘটে এসেছে এই বাংলায়। কিন্তু বর্তমানকাল তো আর চিরকালের মধ্যে পড়ছে না, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর যুগ এসে যাওয়ার পর পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে, আবহাওয়া উল্টোপাল্টা আচরণ শুরু করেছে, জলবায়ু যাচ্ছে বদলে। সাগরের পানি ফুলছে, পাহাড়ের তুষার গলছে, বাংলাদেশের এক–তৃতীয়াংশ বছর চল্লিশেক পর থাকবে পানির নিচে। কাজেই আমরা চাইবই শীতকালে শীত পড়ুক।


তো কয়দিন ধরে শীত পড়তে শুরু করেছে। অমনি আমরা অভিযোগ করতে শুরু করেছি, এত শীত কেন! শীতের সঙ্গে এই বায়ুদূষণের দেশে শুরু হয়েছে কুয়াশা, ধূলি আর ধোঁয়ার সঙ্গে মিশে তা হয়ে উঠেছে ধোঁয়াশা। কোনো কিছুই আর দেখা যাচ্ছে না। উড়োজাহাজ উড়তে পারছে না সময়মতো, ফেরিঘাটে আটকে আছে ফেরি, মহাসড়কে গাড়িগুলো চলছে পিঁপড়ার গতিতে, ১০ হাত দূরে কী আছে দেখা যাচ্ছে না বলে।


এরই মধ্যে প্রথম আলোর খবর, সামনের সপ্তাহে আসছে শৈত্যপ্রবাহ। আমরা পূর্ব বাংলার মানুষ, সত্য উচ্চারণ করে থাকি সইত্য, কাজেই কেউ যখন বলে শৈত্যপ্রবাহ আসছে, আমরা শুনি সইত্যপ্রবাহ আসছে, আমাদের পিলে চমকে ওঠে! সেকি! সত্যপ্রবাহ আসছে নাকি! এখন থেকে মিথ্যার প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে, বইতে থাকবে সত্যের সুবাতাস!


সুবাতাস! আহ! পেটটা ছোট করে বুকটা ভরে নাকটা টেনে একটা বড় শ্বাস নেওয়ার পর হুঁশ হয়, সত্যের প্রবাহ আমাদের সইবে তো!


তখন আমরা ‘বস, আপনার আজকের গোলাপি কোটটা আপনাকে যা মানিয়েছে না’ বলার বদলে কি বলে ফেলব, ‘স্যার, এইটা কী পরছেন, এই রকম একটা ক্যাটক্যাটা রং মাইনষে পরে!’ ‘যা রান্না হয়েছে না, বহুদিন পর তৃপ্তি ভরে খেলাম’ না বলে কি আমরা বলতে থাকব, ‘আপনার চেষ্টাটা মহৎ, কিন্তু ফল সুবিধার না, ডালে লবণ বেশি, মাছ সেদ্ধ হয়নি, কাঁচা মাছের গন্ধে পেট উগড়ে আসছে, এরপর মানুষকে ডেকে খাওয়াতে হলে রান্নাটা অন্তত ভালো কাউকে দিয়ে করাবেন!’ ‘যা খুশি হয়েছি, আপনার ছেলের রেজাল্টে পাড়ার সবার মুখ উজ্জ্বল হয়েছে’ না বলে কি মুখের ওপর বলে ফেলব, ‘ভালো রেজাল্টের কোনো দাম নাই, ওই যে কাশেম সাহেবের ছেলে অনার্স–মাস্টার্স ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট, এখন দুদকের মামলায় কাশেমপুর জেলে আছে। আপনারটাও ওই রকমই একটা কিছু করবে!’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও