একাত্তরের গণহত্যার বিচার এখন পাকিস্তানীরাও চায়
এক সময়কার বিশ্বের এক নম্বর যোদ্ধার দাবিদার পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একাত্তর সালে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বুঝিয়ে দিয়েছিল তাদের দম্ভটা ছিল ফানুসের মতো। তবে বর্বরতায় তারা বিশ্বরেকর্ড করতে পেরেছে। হানাদার পাক বাহিনী মাত্র নয় মাসে ৩০ লাখ নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা এবং ৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ করে।
এই ন্যক্কারজনক রেকর্ড আগে কারও ছিল না। ভবিষ্যতেও এটি কেউ স্পর্শ করতে পারবে বলে বিশ্বাস হয় না। এমনই একটা দেশ বা জাতির সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ২৪ বছর যুক্ত ছিলাম ভাবলে আঁতকে উঠতে হয়। ওই বর্বরোচিত ঘটনার জন্য অবশ্য দেশটির কোনো অনুশোচনা নেই। বরং পাকিস্তানিরা তাদের সেনাবাহিনীর ন্যক্কারজনক কাজকে বীরের কাজ বলে জ্ঞান করে এসেছে।
বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করে আসছে। দেশে দীর্ঘদিন সামরিক শাসন কায়েম থাকায় মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চাপা ছিল। বিশেষ করে ২০০৯ থেকে টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় সেগুলো আবার বেগবান হয়েছে। এখন বলা যায়, একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দোরগোড়ায় রয়েছে।
বিগত ৫০ বছরে বিশ্ব অনেক উত্থান-পতন প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের উত্থান এবং পাকিস্তানের পতন সবাইকে ছাপিয়ে গেছে। এ কারণে পাকিস্তানি মিডিয়া এখন বাংলাদেশের জয়গানে মুখর। তারা এই উত্থানে বিষ্ময়ও প্রকাশ করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ পাকিস্তানের চেয়ে প্রায় তিনগুণ শক্তিশালী। জাতিসংঘের সব সূচকেই বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে ‘বিশ কদম’ এগিয়ে। স্বাধীনতা লাভের প্রথমদিকে অবশ্য বাংলদেশ চরম দুঃসময় অতিক্রম করেছে।