![](https://media.priyo.com/img/500x/https://www.jugantor.com/assets/news_photos/2022/12/20/image-626752-1671480579.jpg)
ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষাভাবনা
এ দেশের সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবন সংগ্রামই ছিল স্যার ফজলে হাসান আবেদ কেসিএমজি’র উন্নয়নচিন্তার কেন্দ্র। তিনি বিশ্বাস করতেন, গুণগত ও মানসম্পন্ন শিক্ষাই বদলে দিতে পারে দেশ ও জাতির ভাগ্য। বৈষম্যহীন, দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষিত জাতি গঠনই ছিল তার ধ্যান ও জ্ঞান। উদ্ভাবনী শিক্ষা সংস্কারের মাধ্যমে ফজলে হাসান আবেদ বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। ফজলে হাসান আবেদ বিশ্বাস করতেন, সমাজকে বদলাতে হলে প্রথমেই এর শিক্ষাব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন নিশ্চিত করতে হবে। কারণ শিক্ষাই পারে একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করতে। শিক্ষাই পারে আজ ও আগামীর ভিত গড়তে। ফজলে হাসান আবেদ অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করাই ছিল তার দর্শন। এমনই দৃঢ় বিশ্বাসে ফজলে হাসান আবেদ শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন তার দূরদৃষ্টিতে, কর্মে, আর নিবিড় আবেগে।
জীবনবৃত্তান্ত
ফজলে হাসান আবেদ ১৯৩৬ সালে সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি লন্ডনে অ্যাকাউন্টেন্সি বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট হন। পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানির সিনিয়র করপোরেট এক্সিকিউটিভ হিসাবে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নাটকীয়ভাবে তার জীবনের দিক পরিবর্তন করে দেয়। চাকরি ছেড়ে তিনি লন্ডনে চলে যান। সেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামে দুটি সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে তিনি যখন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তখন দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। ভারত থেকে ফিরে আসা এক কোটি শরণার্থীর জন্য জরুরিভাবে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল। ফজলে হাসান আবেদ তখন প্রত্যাগত শরণার্থীদের সহায়তায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় ‘ব্র্যাক’ গড়ে তোলেন। দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন ঘটানো ছিল প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য। ব্র্যাক এখন বিশ্বের এক নম্বর এনজিও, যার কার্যক্রম এশিয়া ও আফ্রিকার এগারোটি দেশে পরিচালিত হচ্ছে।