রাজনীতিবিদদের উসকানিমূলক বক্তব্য কাম্য নয়
কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন জনসমাবেশে বিএনপির কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির মুখ থেকে যে ধরনের উসকানিমূলক, অসাংবিধানিক বক্তব্য নির্গত হচ্ছে, তা একটি দেশের অতি সাধারণ মানুষের মুখ থেকেও বের হবে কি না সন্দেহ। দেশের জনগণ ওই সব অশোভন কথাবার্তা শুনে নিশ্চয়ই তাঁদের বাহবা দেবে না। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এ রকম অগণতান্ত্রিক মস্তিষ্কপ্রসূত অরুচিকর ভাষায় বক্তৃতা করে ওই ব্যক্তিরা রাজনীতির মাঠ যতই উত্তপ্ত করুন না কেন, জনগণ তা ভালোভাবে গ্রহণ করে না। এসব কথা যে মানুষের মনে বিরক্তির সৃষ্টি করে, তা হয়তো ওই বক্তারা জেনেও না জানার ভান করে দলের বাহবা কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
রাজনীতির সঙ্গে যাঁরা সরাসরি জড়িত, তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত না হলে এ রকমটি যে চলতেই থাকবে। এহেন আচরণ ও কথাবার্তার ধরন দেখে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে—তাঁদের কি রাজনীতিবিদ হিসেবে আদৌ গণ্য করা সংগত? রাজনীতিবিদের প্রচলিত সংজ্ঞায় কি তাঁরা পড়েন, নাকি বাংলাদেশের মানুষের জন্য তাঁরা রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদের ভিন্ন কোনো সংজ্ঞার প্রচলন করতে যাচ্ছেন? হয়তো তা-ই।
গ্রিক শব্দ ‘পলিটিকা’ থেকে পলিটিকস বা রাজনীতি শব্দের উৎপত্তি হয়, যার অর্থ ‘শহরের বিষয়াবলি’। অর্থাৎ শহরকে কেন্দ্র করেই রাজনীতির চর্চা গড়ে উঠেছিল। সময়ের সঙ্গে তার বিস্তার ঘটতে শুরু করে এবং একসময় প্রতিটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও রাজনীতি ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীর উন্নত বা অনুন্নত প্রায় সব দেশেই এখন রাজনীতির সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তবে রাজনীতিচর্চার ধরন একেক দেশে একেক রকম হয়ে থাকে। একটি দেশের রাজনৈতিক কাঠামো এবং নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে ওই দেশে রাজনীতিকে কিভাবে ধারণ ও চর্চা করা হয়। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আদর্শ, দলগুলোর দর্শন এবং কর্মপন্থা, জনগণের কাছে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এবং দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি একটি দেশের রাজনৈতিক চিত্রটিকেই প্রকাশ করে। বাংলাদেশে রাজনীতির যে অবস্থা আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা কি ওই সব চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া অন্য কিছু?
- ট্যাগ:
- মতামত
- মন্তব্য
- রাজনীতি
- রাজনীতিবিদ