You have reached your daily news limit

Please log in to continue


গোয়েবলস ও সামাজিক মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণহীন মিথ্যাচার

জোসেফ গোয়েবলস ছিলেন হিটলারের নাৎসি জার্মানির তথ্য ও প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি ছিলেন মিথ্যাকে ‘সত্য’ বানানোর এক ভয়ংকর কৌশলের রূপকার। গোয়েবলস বিশ্বাস করতেন, ‘একটি বড় মিথ্যাকে বারবার বললে মানুষ একসময় সেটিকে সত্য বলে মেনে নেয়।’ তাঁর এই নীতি দিয়েই নাৎসি জার্মানি কোটি মানুষের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করেছিল, উসকে দিয়েছিল যুদ্ধ, ঘৃণা আর ধ্বংস। ভাবুন তো, এমন একজন মানুষ যদি পেতেন বর্তমানের ফেসবুক, টুইটার বা ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমের হাতিয়ার—তাহলে কী হতে পারত?

আমরা আজ যে সময়ে বাস করছি, তা যেন গোয়েবলসের সেই কল্পনারই বাস্তব রূপ। প্রতিদিন আমাদের সামনে ভেসে আসে মিথ্যার ঢেউ। কখনো তা রাজনৈতিক, কখনো পারিবারিক, কখনো আবার সাংস্কৃতিক বা ব্যক্তিগত। সামাজিক মাধ্যম এখন আর শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম নয়—এটি হয়ে উঠেছে বিভ্রান্তি, মিথ্যা প্রচার এবং বিভাজনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।

ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (আগের টুইটার)—এইসব সামাজিক মাধ্যম এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোকে আধুনিক যুগের চায়ের দোকান বললে ভুল হবে না। পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানে যেমন হরেক রকম মানুষ ভিড় করে, দেশের খবর থেকে শুরু করে পাড়ার গসিপ পর্যন্ত সব আলোচনা হয়, তেমনি এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতেও সব শ্রেণির মানুষের আনাগোনা। এখানে কেউ নিজেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে জ্ঞান বিতরণ করছে, কেউ নীতি ও আদর্শের ধারক সেজে উপদেশ দিচ্ছে, আবার কেউ কেবল কৌতুকপ্রেমী দর্শক হয়ে অন্যের পোস্ট দেখছে আর লাইক-শেয়ার করছে। কিন্তু এই ডিজিটাল চায়ের দোকানে একটা বড় সমস্যা হলো, খবরের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো বালাই নেই। এখানে ভাবনার গভীরতার চেয়ে মন্তব্যের দ্রুততা আর প্রতিক্রিয়ার প্রতিযোগিতাটাই মুখ্য। কে কতটা দ্রুত একটা খবর ছড়াতে পারল, সেটাই যেন বড় বিষয়। ফলে যা ইচ্ছে তা-ই লেখা হচ্ছে, বলা হচ্ছে, আর মানুষ যাচাই না করেই তা বিশ্বাস করে ফেলছে।

এই খোলামেলা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের একদিকে যেমন ভালো কথা, শিক্ষামূলক বিষয়বস্তু বা মানবিক উদ্যোগের খবর ছড়ায়, তেমনি এর উল্টো পিঠে রয়েছে ভয়ংকর মিথ্যা, কুৎসা আর চরিত্রহননের অবাধ বিচরণ। এখানে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে সহজেই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। অনেক পুরোনো ছবিকে বর্তমানের ছবি হিসেবে ব্যবহার করে এই গুজবকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা হয়। কে বা কারা এই মিথ্যা খবরটি প্রথম ছড়িয়েছিল, তা হয়তো আমরা জানতেও পারিনি, কিন্তু হাজার হাজার মানুষ কোনো রকম যাচাই-বাছাই না করেই চোখ বন্ধ করে তা বিশ্বাস করে ছড়িয়ে দিতে শুরু করে। আর একবার যখন মিথ্যা ছড়িয়ে পড়ে, তখন তা ফিরিয়ে আনা বা তার ক্ষতি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এটাই আমাদের বর্তমান সামাজিক মাধ্যমের বাস্তবতা। এখানে সত্যের তুলনায় মিথ্যার গতি অনেক বেশি। কেউ যদি চায়, সহজেই কারও সম্মান নষ্ট করে দিতে পারে। কারণ, এখানে দায় নেই, জবাবদিহি নেই। কেউ ভুল কিছু পোস্ট করলে সেটি একবার ভাইরাল হয়ে গেলে আর ফেরানো যায় না। খবরের কাগজে ভুল হলে সংশোধনী ছাপা যায়, টিভিতে ভুল হলে ক্ষমা চাওয়া যায়—কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভুল পোস্টের পরিণতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

মিথ্যার এক ভয়ংকর জালে আটকে যাচ্ছে আমাদের পরিবার, সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। কিশোর-কিশোরীরা এখন রাতে ঘুমায় না—রিল দেখে, লাইকের নেশায় ছুটে চলে, অচেনা পরিচয়ের মোহে গড়ে তোলে সম্পর্ক, আর ধোঁয়াটে এক ‘পর্দার সুখ’-কে বাস্তব ভেবে মজে যায় অবাস্তবের জগতে। একেকটা রঙিন ফ্রেমে বন্দী হয়ে ভেঙে পড়ছে বাস্তব জীবন। ঘর ভাঙছে, সম্পর্ক ভাঙছে, ভালোবাসা বদলে যাচ্ছে সাময়িক উত্তেজনায়। মা সন্তান ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে, স্বামী নীরবে দ্বিতীয় বিয়ে করছে। এই নকল সুখ খুঁজতে গিয়ে মানুষ হারিয়ে ফেলছে জীবনের আসল মানে—শান্তি, দায়িত্ব আর মূল্যবোধ।

‘রিলস’ এখন এক ভয়ংকর ডিজিটাল মাদক। একবার যার নেশায় পড়লে সময়, বিচারবুদ্ধি, বাস্তবতা—সব হারিয়ে যায়। এখানে সত্য-মিথ্যার কোনো বাছাই নেই, যা খুশি তা-ই পোস্ট—গল্প হোক বা গুজব, অপমান হোক বা উসকানি। সামাজিক অনুশাসন, পারিবারিক মূল্যবোধ, নৈতিকতার দেয়াল ভেঙে পড়ছে মুহূর্তে। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, বুদ্ধিমান-নির্বোধ, মানবিক-অমানবিক—সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছে এক মঞ্চে, যেখানে বিভ্রান্তি আর উগ্রতা হয়ে উঠেছে বিনোদনের অংশ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন