স্বপ্নভঙ্গের বাংলাদেশে তারুণ্যের আকাঙ্ক্ষা, বঞ্চনা ও বিদ্রোহ

জাগো নিউজ ২৪ ড. মতিউর রহমান প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০

আজকের বাংলাদেশ এক গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জয়গান, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন আর উচ্চশিক্ষার ক্রমবর্ধমান প্রসার, অন্যদিকে শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব, চাকরির অনিশ্চয়তা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা এক তীব্র বৈপরিত্য তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতি কেবল আর্থিক সমস্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংকট, যা তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ জীবনযাত্রার স্বপ্ন প্রতিনিয়ত ম্লান করে দিচ্ছে।


অর্জুন আপ্পাদুরাইয়ের (Arjun Appadurai) 'Capacity to Aspire' তত্ত্বের (আকাঙ্ক্ষা করার সক্ষমতা) আলোকে এই পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলে বোঝা যায়, সমাজ কাঠামোগতভাবে এমনভাবে সজ্জিত, যা তরুণদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাকেই সীমিত করে তোলে। ফলস্বরূপ, তারা কেবল সুযোগের অভাবই নয়, বরং কাঠামোগত বাধার কারণেও তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এবং হতাশা তাদের জীবনকে গ্রাস করে নেয়।


আপ্পাদুরাইয়ের মতে, স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা কোনো ব্যক্তিগত খেয়ালিপনা নয়, বরং এটি সামাজিকভাবে গঠিত একটি ক্ষমতা। যে সমাজের কাঠামো সুদৃঢ় এবং সহায়ক, সেখানকার মানুষ তাদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথ খুঁজে পায়। কিন্তু দরিদ্র কিংবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই ‘নেভিগেশন টুল’ বা পথ খোঁজার সামর্থ্য দুর্বল থাকে।


বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, তরুণরা শিক্ষা, চাকরির বাজার এবং শাসন কাঠামোর মধ্যে যেসব কাঠামোগত বৈষম্যের মুখোমুখি হয়, তা তাদের স্বপ্ন পূরণের ক্ষমতা ভীষণভাবে সীমাবদ্ধ করে। এটি এক অদ্ভুত বাস্তবতা যে, স্কুল, পরিবার কিংবা সামাজিক পরিসরে স্বপ্ন দেখার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়, সেই একই প্রতিষ্ঠানগুলো আবার স্বপ্ন পূরণের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়।



উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রায়শই মুখস্থ বিদ্যা এবং গতানুগতিক সিলেবাসের ওপর জোর দেয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তা বা বাস্তবভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে সহায়ক নয়। অন্যদিকে, পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায়শই প্রচলিত সরকারি চাকরির প্রতি জোর দেওয়া হয়, যা সীমিত সংখ্যক এবং তীব্র প্রতিযোগিতামূলক।


ফলে তরুণরা প্রচলিত পথে স্বপ্ন দেখতে শেখে, কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে সেই স্বপ্নের সংঘাত তৈরি হয় যখন তারা চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। এ শিক্ষাব্যবস্থা এবং সামাজিক প্রত্যাশা তরুণদের জন্য 'আকাঙ্ক্ষার ফাঁদ' তৈরি করে, যেখানে স্বপ্ন দেখার পরিবেশ থাকলেও তা পূরণের পথ অপ্রতুল।


বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্রুত প্রসার শিক্ষাকে একধরনের পণ্যে পরিণত করেছে। উচ্চশিক্ষাকে মধ্যবিত্ত জীবনে উন্নতির সিঁড়ি হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও বাস্তবে চাকরির বাজারে দক্ষতার অভাব, ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা এবং উপযুক্ত কাজের অভাবে এই শিক্ষাগত অর্জন প্রায়শই অর্থহীন হয়ে পড়ে।


দেখা যায়, হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট প্রতি বছর বের হচ্ছে, কিন্তু তাদের জন্য পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না। এর মূল কারণ হলো, শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিল্পের চাহিদার মধ্যে একটি বিরাট অসামঞ্জস্য রয়েছে। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমন বিষয়ে ডিগ্রি প্রদান করে যার বাজারে চাহিদা নেই, অথবা থাকলেও প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক জ্ঞান প্রদান করা হয় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও