প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আস্থা ও ঐক্যের নতুন মাত্রা যুক্ত হবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সরকারি সফরে গতকাল দিল্লিতে পৌঁছেন। সফরকালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। আজ তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসবেন।
আগামীকাল দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের মধ্যে যে অনুষ্ঠানটি হবে সেখানেও তিনি যোগ দেবেন। তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজমির শরিফ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ‘মুজিব বৃত্তি’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন।
বাস্তবতা হলো, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের মতো একই রকম নয়। কারণ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তিতে রয়েছে দুটি দেশের একই ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, আস্থা ও ঐক্যের শক্তিশালী চেতনা। সেই চেতনার বহিঃপ্রকাশ দুই দেশের বন্ধনের মাত্রা বিভিন্ন সময় ও পরিস্থিতিতে দুই দেশের জনগণই প্রমাণ করেছে। তবে চলার পথে তাদের যে একেবারেই হোঁচট খেতে হয়নি তেমন নয়। যা হোক, বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে সেই সম্পর্ক দিন দিন এক অনন্য উচ্চতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সফরটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার নিরলস প্রচেষ্টারই একটি অংশ।
দুটি দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফর অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। আর উচ্চ পর্যায়ের (রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান) সফরবিনিময় দুটি দেশ ও তাদের জনগণের সম্পর্কের বন্ধনকে দৃঢ়তর করার মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়ার পথ প্রশস্ত করে। এর ফলে শুধু দুই দেশের নেতাদের মধ্যেই নয়, দুটি দেশের জনগণের মধ্যেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আর সেই প্রভাবে দুটি দেশ ও জনগণ যেকোনো সমস্যা সমাধানে এবং উন্নয়ন সহযোগিতার সব ক্ষেত্রে যৌথ স্বার্থেই এগিয়ে আসে। পরবর্তী সময়ে যখন দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায়, তখন তাদের মধ্যে সমস্যা প্রকট হতে পারে না। তাই বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণকে সেই মানসিকতায় এগিয়ে নিয়ে যেতে দুই দেশের নেতারা সব সময়ই উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফরকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু ভারত সফর দিয়েই তাঁর বিদেশ সফর শুরু করেননি, তিনি সবচেয়ে বেশিবার ভারত সফর করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। অন্যদিকে ভারতের নেতারাও একইভাবে বাংলাদেশ সফর করাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। এরই প্রমাণ হিসেবে আমরা গত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে অনেক সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হতে দেখেছি।