মিয়ানমারের 'উস্কানি' এবং বাংলাদেশের করণীয়
মিয়ানমার সম্প্রতি বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে সীমান্তে দুটি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে। মিয়ানমারের দিক থেকে আকাশসীমা লঙ্ঘন অবশ্য নতুন কিছু নয়। শুধু বাংলাদেশ নয়; এর আগে চীন ও থাইল্যান্ডের আকাশসীমাও লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমার। বস্তুত এসব ঘটনা দেশটির বেপরোয়া আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ। আমরা জানি, দেশটিতে চলছে সামরিক শাসন। মাঝে এক ধরনের 'সীমিত' গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমরা দেখেছি। তারও আগে ৫৫ বছর একটানা সামরিক শাসনে ছিল দেশটি। ফলে আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বহুলাংশে বিচ্ছিন্ন দেশটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার স্বাভাবিক নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে বরাবরই নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করে থাকে।
আমরা দেখেছি, সামরিক জান্তার স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতা দেশটির নাগরিকরাও ইতিবাচকভাবে নেয়নি। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেখানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই প্রতিবাদী মানুষ বাইরে নেমে আসে। প্রতিবাদকারীদের হত্যা, দমন-পীড়নের পরও তাদের আন্দোলন থেমে নেই। মিয়ানমারের নানা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে সেখানকার সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘুদের ওপর হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, সহিংসতা ও নিপীড়ন চালিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভূমি রাখাইন রাজ্যের স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের জের ধরে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে মর্টার শেল পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন এবং ওই এলাকার বাসিন্দাদের বরাতে সংবাদমাধ্যমে এসেছে, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। দু'পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমানের তৎপরতাও দৃশ্যমান।