কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

খেলাপি ঋণে ‘গণছাড়’ দেশের আর্থিক খাতের জন্য কী বার্তা দিচ্ছে

বণিক বার্তা ড. আরএম দেবনাথ প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২২, ০৭:৫৫

কোনো একজন ব্যক্তি ভুল করলে ভোগে সেই ব্যক্তি, আর কেউ নয়। বড় জোর তার পরিবার অবশ্যই। অন্য কেউ এর ভাগীদার হয় না। যদি একটি ব্যাংক ভুল করে তাহলে? তাহলে এর ফলাফল ভোগ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। ভোগ করবে কর্মচারী-কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত এর ফল অবশ্যই ভোগ করবে ব্যাংকের মালিকপক্ষ।


তবে কথা আছে ভুলটি যদি মারাত্মক হয়, আত্মবিধ্বংসী হয় তাহলে ব্যাংকের এই ভুলের জন্য বা অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য ভুগবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের আমানতকারীরা। ব্যাংক বন্ধ হতে পারে, সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে। পুনর্গঠন স্কিম হবে। আমানতকারীদের টাকা পেতে অসহ্য ভোগান্তি পোহাতে হবে। অবশ্য এতে অন্য ব্যাংকের আমানতকারীদের শাস্তি ভোগ করতে হবে না। ব্যাংক খাতে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে। তবে তা সহ্য করে নেয়ার মতো ক্ষমতা অর্থনীতির থাকে। এবারে প্রশ্ন, ভুলটি যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক করে? এখানেই কথা উঠবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী ভুল করতে পারে? তারা হচ্ছে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। শুধু নীতিমালা প্রণয়ন করে, দৈনন্দিন ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে তারা জড়িত নয়। তারা আমানত গ্রহণ করে না, ঋণও দেয় না সাধারণ মানুষকে। তাদের ভুল হলে অসুবিধা কোথায়? আর সবচেয়ে বড় কথা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল ধরার কে আছে? সরকারের লোক কেন্দ্রীয় ব্যাংক চালায়। গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, ব্যাংকের পরিচালক সবাই সরকারের অনুমোদিত/মনোনীত লোক। অতএব তাদের ভুল কে ধরবে? বাণিজ্যিক ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভুল, অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি ধরার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়েছে। বীমা কোম্পানিগুলোর ভুল-ত্রুটি, অনিয়ম ধরার জন্য রয়েছে ‘ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট রেগুলেটরি অথরিটি’ (আইডিআরএ)।


মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য রয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেরই নিয়ন্ত্রক সংস্থা আছে, যারা তাদের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভাল ও তদারকি করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি করার জন্য কি কেউ আছে? তারা ভুল-ভ্রান্তি করছে কিনা, তাদের ওখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কিনা তা দেখার কেউ কি আছে? বলতে পারেন সরকারি বাণিজ্যিক অডিট (কমার্শিয়াল অডিট) রয়েছে। তারা অনিয়ম দেখে। অবশ্যই দেখতে পারে। তা হচ্ছে আর্থিক অনিয়ম। আমি এ কথা বলছি না। আমি বলছি নীতিগত, পদ্ধতিগত ভুল-ভ্রান্তি, মারাত্মক ভুল-ভ্রান্তির কথা। এগুলো দেখার কে আছে? প্রতি বছর অন্তত দুবার, যতদূর জানা যায়, গভর্নর সাহেবকে নাকি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে হাজিরা দিতে হয় কাগজপত্র নিয়ে। কিন্তু এই কমিটির কার্যবিবরণী খবরের কাগজে দেখি না বিধায় সেখানে কী হয় আমরা জানি না। যদি দেখতাম ভুল-ভ্রান্তির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শাসানো হচ্ছে তাহলে বুঝতাম—না, দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জবাবদিহিতার জন্য ব্যবস্থা আছে। আসলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল-ত্রুটি এবং এর বিচার-আচারের কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান নয় বলেই কথাগুলো ওঠে। সব প্রতিষ্ঠানের ও ব্যাংকের লোকেদের ভুল-ত্রুটি, অনিয়ম, জাল-জালিয়াতির জন্য মামলা খাওয়ার, জেলে যাওয়ার উদাহরণ আছে—কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন কিছু আছে কিনা কেউ তা জানি না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ভিন্নতর। ব্যাংকের ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি, অনিয়ম ধরার জন্য ব্যবস্থা আছে, তার বিচারের জন্য ব্যাংকের বোর্ড রয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান দৈনন্দিন ভিত্তিতে ব্যাংক পরিচালনা করেন না, তার কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। অতএব বিচারের কাজ করা তার জন্য অনেকটা সহজ।


কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বেসর্বা হচ্ছেন গভর্নর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর স্বয়ং ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান, আবার ব্যাংকের সব নির্বাহী ক্ষমতাও তার। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ডের অন্য সদস্যরা কার্যত গভর্নরের কাজকেই অনুমোদন দেন। কারণ গভর্নর ‘বোর্ডের সকলই সমান’ এই নীতির ঊর্ধ্বে। ঐতিহাসিকভাবেই এ ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে দেয়া হয়েছে, যাতে শক্ত হাতে তিনি ব্যাংক ও ব্যাংক খাতের হাল ধরতে পারেন। তাকে সরাসরি সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য রয়েছে ডেপুটি গভর্নর এবং নির্বাহী পরিচালক। এমতাবস্থায় ধরেই নেয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে, বিচারের ঊর্ধ্বে, জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে! তারা ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ‘পাহাড়কে দরিয়া করতে পারেন, দরিয়াকে পাহাড় করতে পারেন’—কারো কিছু বলার নেই এতে। এহেন অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যাচ্ছে দৃশ্যত জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। বাণিজ্যিক ব্যাংক তাদের ভুল ধরলে ‘খবর আছে’। কারণ গভর্নর নয়, ওই ব্যাংকের একজন সহকারী পরিচালক ফোন করলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়েন। তাদের কত অনৈতিক ‘অনুরোধ’ যে কার্যকর করতে হয় তার কোনো হিসাব নেই। এখানেই প্রশ্ন: তবে কি তারা দোষ-ত্রুটি, ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে? একটা সাম্প্রতিক ঘটনা বা সিদ্ধান্ত থেকে মনেই হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভুল করে, যার মাশুল পুরো ব্যাংক খাতকেই গুনতে হয়। সিদ্ধান্ত/পদক্ষেপটি কী? কী আছে এতে?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও