![](https://media.priyo.com/img/500x/https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_302882_1.jpg?t=1655006979)
ঋণ পরিশোধ অর্থনীতির জন্য বোঝায় পরিণত হচ্ছে কি
৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ডিজিটাল বাজেট প্রেজেন্টেশন থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে যেটুকু ধারণা পাওয়া গিয়েছিল, সেটাকে খুব অতৃপ্তিকর মনে হলেও পরবর্তী সময়ে বাজেটের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মিডিয়ায় যেসব বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপিত হয়ে চলেছে তা থেকে বলা যায়, আগামী অর্থবছরের বাজেট চলমান মূল্যস্ফীতি সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে মারাত্মক ডলার সংকট মোকাবেলাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ দুটো উদ্দেশ্যকেই যথাযথ বলা চলে, কারণ বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এগুলোকেই সংকটজনক ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।
বেশ কয়েক বছর বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ১ ডলারের দাম ৮৫ টাকার আশপাশে ধরে রাখায় সফল হয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব ডলার সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে, যার শুরুটা হয়েছিল আমদানি ব্যয়ের বেলাগাম বৃদ্ধির মাধ্যমে। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ওই দশ মাসে দেশের রফতানি আয়ও ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, ওই দুটো বৃদ্ধির প্রবণতা হয়তো কভিড-১৯ মহামারীর অবদমিত চাহিদার মহামারী-উত্তরণ পর্বের উল্লম্ফনের স্বাভাবিক প্রতিফলন। কিন্তু ওই ভুল ভাঙতে দেরি হয়নি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর। যুদ্ধের অভিঘাতে বাংলাদেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ আমদানি পণ্যের দাম হু-হু করে বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকায় আমদানি ব্যয়ের অনেকখানি উল্লম্ফন ঘটেছে—এটা বোঝা গেলেও ওভার ইনভয়েসিং অব ইমপোর্টস, আন্ডার ইনভয়েসিং অব এক্সপোর্টস ও হুন্ডি ব্যবসা আবার চাঙ্গা হওয়ায় দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারও যে দ্রুত বেড়ে চলেছে, সেটা টের পেতে বিলম্ব হয়নি। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেড়ে যখন ১০৪ টাকায় পৌঁছে গেল, তখন ব্যাপারটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত আমদানি নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করল এপ্রিল থেকেই, যার ধারাবাহিকতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও প্রধান অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকট নিরসন এবং আমদানি নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত কমিয়ে আনা।