আগুনই স্বাভাবিক
স্বাভাবিক পুনরাবৃত্তির ধর্ম হলো, তা চূড়ান্ত অস্বাভাবিক ঘটনাকেও ক্রমে স্বাভাবিক করে তোলে। বিধ্বংসী আগুনে বাংলাদেশের কোনও না কোনও অঞ্চলের মানুষ সর্বস্ব হারাবেন; নিজের বা প্রিয়জনের জীবন যাবে, আজীবনের স্বপ্ন পুড়ে গিয়ে কোনও নারী, বৃদ্ধ শূন্যদৃষ্টিতে চেয়ে থাকবেন; পুড়ে যাওয়া স্থাপনার অনতিদূরে কোনও শ্রমিকের পুড়ে যাওয়া হাত পড়ে রইবে, সংবাদপত্রে পাতায় তা ভালো ছবি হবে, কোনও শ্রমিকের মা বা স্ত্রী বা সন্তান কারখানার সম্মুখে কান্নায় ভেঙে পড়বেন— এই দৃশ্যগুলো এখন এমনই স্বাভাবিক যে সেগুলো সংবাদমাধ্যমের চিত্রগ্রাহকের ক্ষণিক মনোযোগের চাইতে বেশি কিছু আর দাবি করে না।
বাংলাদেশে আগুন লাগা এক স্বাভাবিক ঘটনা। তবু কিছু কিছু আগুনের ঘটনা নতুন করে ভাবায় আমাদের। কোনও কোনও ঘটনা আমাদের সামনে বড় বাস্তবতা উপস্থিত করে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এখনও শীতল হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু জ্বলছে ঠিকই। সেখানকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা জাতি আজ স্তব্ধ, শোকার্ত; যদিও কোনও জাতীয় শোকদিবসের ঘোষণা আসেনি। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নয় জন কর্মীসহ চল্লিশের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কোনও ঘটনায় এত অগ্নিনির্বাপণ কর্মীর মৃত্যু এটিই প্রথম। আহত দুই শতাধিক, যাদের অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।