জনবিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়
আমাদের দেশে এত অঘটন ঘটে থাকে যে কোনো একটি ঘটনা আলোচনার তুঙ্গে ওঠার আগেই তামাদি হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কোনো ঘটনা স্মরণে রাখা দরকার। না হলে ভবিষ্যতের ভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হবে। কারো জানতে বাকি নেই যে ঈদ-পূর্ব ঢাকায় একটি অদ্ভুত অপ্রয়োজনীয় ঘটনার মঞ্চায়ন হয়েছিল ধানমণ্ডির তেঁতুলতলা ‘মাঠ’ ঘিরে।
এই নাটক শুধু দেশবাসী নয়, বিশ্বের অনেকেই অবলোকন করেছে। অঘটনের কশাঘাতে পিষ্ট স্থানীয় শিশু-কিশোর আর তাদের অভিভাবক। তাদের রক্ষায় বিবেক হিসেবে এগিয়ে এসেছিলেন বিভিন্ন ব্যানারের নাগরিক সমাজের মানুষ। কয়েক দিনের মহড়ায় অসহায় দৃষ্টিতে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছিল কিছু যুক্তিহীন নিম্নমানের অপতৎপরতা।
সাম্প্রতিক জরিপ ফলাফলে ঢাকা দিল্লিকে টপকে অল্পের জন্য বিশ্বের এক নম্বর দূষিত নগরী হতে পারেনি। চ্যাম্পিয়নের মুকুট পাওয়ার জন্য আমাদের প্রশাসন যে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে তা স্পষ্ট হয় তেঁতুলতলা মাঠ ঘিরে কিছুদিনের শোডাউন ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীলদের অপ্রয়োজনীয় ও তাৎপর্যহীন বক্তব্যে। পরিসংখ্যান মতে, জনসংখ্যা অনুপাতে যেখানে ঢাকা শহরে কমপক্ষে আড়াই হাজার মাঠ-পার্ক বা খোলা চত্বর থাকার কথা, সেখানে আড়াই শও টিকে নেই। এর অনেকগুলো আবার সংকুচিত হয়ে গেছে। অনেকগুলো রয়েছে দখলদারদের দখলের হুমকিতে। এমন অবস্থায় নাগরিকদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় দেশের সরকারেরই ভূমিকা রাখার কথা। কিন্তু যুগ যুগ ধরে এ দেশের সরকারগুলো খাল দখল, নদী দখল আর মাঠ দখলের মতো মহা-অপকাণ্ডে নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকেছে। কখনো কখনো সরকারপক্ষই দখলদারের ভূমিকায় নেমেছে। এরই ধারাবাহিকতা যেন দেখতে হলো তেঁতুলতলা মাঠকাণ্ডে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- তেঁতুলতলা মাঠ