অতলান্ত গভীর আলোর প্রাণপুরুষ
সময় নদীর মতো। আমি বলি, সময় সময়ের মতো। ধরতে পারলে থেকে যায়। বিফল হলে বিস্মৃতির ব্ল্যাকহোলই শেষ নিয়তি। আবেদ ভাই এসেছিলেন থাকার জন্য নয়, যা প্রকৃতির চিরন্তনে নির্দিষ্ট। কিন্তু তিনি শাল্লা থেকে ঢাকা হয়ে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছেন যতিচিহ্নহীন। বিশ্বময় রয়ে গেলেন সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে। দেওয়া-নেওয়া আর নেওয়া না দেওয়া। শুধুই দেওয়ার উৎসবে সারা জীবন উৎসর্গ করা মানুষের সংখ্যামাত্র। ব্যতিক্রমী কয়েকজন। তাঁর মধ্যে অন্যতম আমাদের সবার আবেদ ভাই।
আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের সময়ে তাঁর সুবিশাল কর্মকাণ্ড সবাইকে বিস্মিত করে! সম্ভাবনা ও আত্মবিশ্বাসের শক্তি এবং অবহেলিত নারীসমাজের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে বেঁচে থাকার যে আকাঙ্ক্ষা, তার সবই তিনি সুন্দরভাবে পরিকল্পিত সত্যের আলোকে প্রতিষ্ঠিত করে যেতে পেরেছেন। তিনি কোনো স্মৃতিস্তম্ভ অথবা স্মৃতিসৌধে অনুগত ছিলেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে আছে লালিত স্বপ্ন। প্রয়োজন সময়মতো সঠিক পথে সহায়তা দিয়ে আলোর স্পর্শের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে পারা।
আবেদ ভাই দূরদর্শী মনোভাবকে সঠিক সময়ে সঠিক সহযোদ্ধা ও সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদেরও অগ্রসর হতে সহায়তা করেছিলেন। পরম নির্ভরতায় তাঁর সব সময়ের স্বপ্নের সঙ্গে ‘এক এবং অদ্বিতীয়’ আমার প্রতিষ্ঠান যতিচিহ্নের বিভ্রম হয়ে থাকবে, এর কোনো মিল নেই। একজন সমাজের প্রয়োজনে পথ তৈরি করেন, আবার ঝড় ও বিপদেও সহায় থাকেন আশ্রয় হয়ে। আমাদের আবেদ ভাই সেই দর্শনের প্রাণপুরুষ। ব্যক্তিজীবনে তিনি সব দায়িত্বে আন্তরিক থেকেও হাজার মানুষের ব্যক্তিজীবনের নির্ভরতার পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সমস্ত জীবন দিয়ে পদযাত্রায় আলোকিত পথের সন্ধান দিয়ে গেছেন অর্থনৈতিক মুক্তি ও শিক্ষার প্রসারে অবহেলিত মানবসম্পদকে। নারীদের অধিকার ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতায় তাঁর অবদান বাংলাদেশ সব সময়ই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণে রাখবে।