ঢাকায় শব্দদূষণ ও শ্রবণ বধিরতা

সমকাল আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২২, ১০:১২

মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর শব্দদূষণের বিশেষ প্রভাবের কারণে বর্তমানে শব্দদূষণ একটি মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে পরিণত হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রায় সব ব্যস্ত এলাকাতেই শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। শব্দের উৎসগুলো স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। শহর এলাকায় শব্দদূষণের প্রভাব গ্রামাঞ্চল থেকে তুলনামূলক অনেক বেশি। শুধু ঘরের বাইরে, রাস্তায়, কর্মস্থলে নয়; শব্দদূষণ ঘরের ভেতর আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন- ফুড ব্লেন্ডার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার এবং প্রেশার কুকার ইত্যাদি থেকেও উচ্চ শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে।


শব্দদূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্ন হওয়াসহ নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। স্বল্পমেয়াদি শব্দদূষণ মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং আমরা সবাই বুঝি যে মানসিক চাপ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই মারাত্মক। দীর্ঘমেয়াদি শব্দদূষণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শ্রবণশক্তি হ্রাসের ফলে বিরক্তি, নেতিবাচকতা, রাগ, ক্লান্তি, চাপা উত্তেজনা, মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিহার ব্যক্তিগত ঝুঁকি বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি ও নতুন কিছু শেখার ক্ষমতা হ্রাস পায়। অন্যদিকে উচ্চশব্দ শিশু, অন্তঃসত্ত্বা, হৃদরোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শব্দদূষণের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। আকস্মিক উচ্চশব্দ মানবদেহের রক্তচাপ ও হূৎকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশির সংকোচন করে, পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়, শিরা ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রচণ্ড চাপ দেয়।


বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) ১০ সদস্যের একটি গবেষক দল ২০২২ সালের মার্চ মাসে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভূমি ব্যবহারের ভিত্তিতে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে। গবেষণার অংশ হিসেবে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ১৭টি হাসপাতালের সামনে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে। প্রতিটি হাসপাতালের সামনে শুধু কর্মদিবসে মোট এক ঘণ্টার শব্দের উপাত্ত তাইওয়ানে তৈরি লোট্রন ব্র্যান্ডের স্বয়ংক্রিয় সাউন্ড লেভেল মেশিনের সাহায্যে রেকর্ড করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, ১৭টি হাসপাতালের সামনের রাস্তায় শব্দদূষণের মাত্রা সর্বনিম্ন ৬৯ দশমিক ৭ ডেসিবল এবং সর্বোচ্চ ৮৯ দশমিক ৯ ডেসিবল পর্যন্ত পাওয়া যায়; যেখানে নীরব এলাকার জন্য আদর্শ মান দিনের বেলায় ৫০ ডেসিবল। আমেরিকান স্পিস অ্যান্ড হেয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন (আশা) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ৭১ থেকে ৯০ ডেসিবল মাত্রায় শব্দ তীব্রতর শব্দদূষণ হিসেবে পরিগণিত হয়।


মাঠ পর্যায়ের গবেষণা থেকে প্রতীয়মান, ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগের অবস্থান ব্যস্ততম ট্রাফিক সংযোগের পাশে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকার জন্য দিনের বেলায় নির্ধারিত আদর্শ মান মাত্রার (৫৫ ডেসিবল) সঙ্গে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালগুলোর সামনে শব্দের মাত্রার তুলনামূলক বিশ্নেষণ করলে দেখা যায়, ১৭টি স্থানেই আদর্শ মান (৫৫ ডেসিবল) অতিক্রান্ত হয়েছে। আবার যদি হাসপাতালগুলোকে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী নীরব এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে দিনের বেলার নীরব এলাকার মান (৫০ ডেসিবল) মাত্রার সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্নেষণ করা যায়; বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সামনে নূ্যনতম ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে সর্বোচ্চ ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ শব্দদূষণ বেশি পাওয়া গেছে। ১৭টি স্থানের মধ্যে শব্দের মাত্রা গড়ে ৮১ দশমিক ৭ ডেসিবল পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৯টি স্থানেই ৮০ ডেসিবলের ওপরে শব্দের মাত্রা রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও