বাংলাদেশ ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে যেসব অনুষঙ্গ ক্রিয়াশীল ছিল তার মধ্যে প্রধান ও অন্যতম হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। তাহলে বর্তমান সময়ে স্বাধীন দেশে হঠাৎ কেন ইসলাম ধর্মীয় ভাবধারার পুনরুত্থান ঘটছে? ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ– এই মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে ১৯৭১ সালে সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম।
স্বাধীন দেশে যে সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণীত হয়েছিল তাতে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার এবং সব ধরনের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রাষ্ট্রীয়ভাবে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে দীর্ঘ সময় সামরিক শাসন কায়েম ছিল। সে-সময়ে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাত ধরে ইসলাম ধর্মীয় ভাবধারার ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হতে থাকে এ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনাচরণে। তবে ইসলাম ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে মৌলবাদের যে উত্থান এ দেশে ঘটেছে, তার বিপরীতে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠায় সবসময়ই সচেষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার। নানা পরিবর্তন-পরিমার্জনের মধ্য দিয়ে এই সময়ে এসে বাংলাদেশের সংবিধানে যে বৈপরীত্য লক্ষণীয় সেখানে ইসলাম ধর্মের মুখোমুখি করে দেওয়া হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতাকে। ফলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ যে চরিত্র ছিল তার অনেকটাই আজ ক্ষুণ্ন।