দেশে সবাই আমাকে উপেক্ষা করেছে
আমি এত দিন যে বাঁচব, ভাবিনি। অনেকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কীভাবে জীবন যাপন করেছেন যে এত দিন বেঁচে আছেন? কিন্তু আমি তো বলতে পারব না কীভাবে জীবন যাপন করার ফলে এত দিন বেঁচে আছি। সবাই তো একই কারণে বাঁচে না। কে, কী কারণে বাঁচে, তা বলা মুশকিল। তবে সুস্থভাবে বাঁচার জন্য সবার একটা জিনিস খুব বেশি করে করা দরকার, সেটা হলো, খাওয়াদাওয়ার হেফাজত। বেহিসাবি খাওয়াদাওয়া করলে কোনো মানুষই বেশি দিন বাঁচে না।
সেটা তো বুঝতে পারি না। আমার বেঁচে থাকা মানুষকে অনুপ্রাণিত করলে, বাস্তবে তো দেখতাম। আমি বলব, আমি একধরনের উপেক্ষিত। আমি যে এত কাজ করেছি, আমাকে নিয়ে কোনো জায়গায় কোনো লেখা পাবেন না। এখানে এত লোকের ওপর লেখা হয়, কিন্তু আমার লেখা নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। এমনকি আমার ভাষা আন্দোলনের বইয়ের ওপরও কোনো আলোচনা নেই। কলকাতায় আমার বই ও লেখার ওপরে অনেক আলোচনা হয়েছে। অনেক কৃতবিদ্য মানুষ আমার ওপরে লিখেছেন। সেটা বাংলাদেশে চিন্তাও করা যায় না। কাজী আবদুল ওদুদ, মৈত্রেয়ী দেবী, নারায়ণ চৌধুরী, অন্নদাশঙ্কর রায়, বিষ্ণু দে, সমর সেন, বিনয় ঘোষ, অশোক মিত্র—এঁরা আমার কাজ নিয়ে লিখেছেন, আলোচনা করেছেন। এঁরা বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে উঁচু স্তরের মানুষ। দলনির্বিশেষে তাঁরা আমার ওপরে লিখেছেন। কিন্তু এখানে দলনির্বিশেষ উপেক্ষা করা হয়েছে।