স্বাস্থ্যসেবাবান্ধব বৃদ্ধাশ্রম সময়ের দাবি
আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্ট পাম বিচ শহরে থাকা অবস্থায় আমি নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানটি প্রথম শুনি। প্রথমে আবেগী হয়ে যাই আর ভাবি যে, আমরা বা মানুষ কত অমানুষ। কিন্তু পরদিন সকালে যখন পাবলিক্স সুপার মার্কেটে বাজার করতে যাই, তখন দেখি সেঞ্চুরি ভিলেজ-কমিউনিটির একটি বাস থেকে অনেক বৃদ্ধ নরনারী নামছে যাদের ঘাড়ে একটি ছোট্ট ব্যাগ, প্রায় প্রত্যেকের হাতে লাঠি, আবার কেউ কেউ পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার বহন করছে। কিন্তু বৃদ্ধ হলেও কারও মুখে বিষাদ, হতাশা বা না পাওয়ার কোনো বেদনার ছাপ দেখলাম না। সবাই সবার সঙ্গে কথা বলছে, লাইন ধরে মার্কেটে ঢুকছে, হাসি-ঠাট্টা করছে, কেনাকাটা করছে; আবার বাইরে এসে রোদ পোহানোর জন্য বেঞ্চে বসছে। আমার জীবনে সেদিন প্রথম আমি বাস্তবে বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের প্রায় ঘণ্টা দেড়েক নিজের বাজার করার ফাঁকে ফাঁকে নিরীক্ষণ করি। পরে বাসায় এসে অনেক ভাবি, এক পর্যায়ে আমার বোধোদয় হয় যে, তাদের বয়স যতই বেশি হোক না কেন, তবু তারা হাঁটতে পারে, হাসতে পারে, মনের কথা বন্ধুর সঙ্গে বলতে পারে, অল্প করে হলেও নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারে, বয়সের প্রয়োজনে ভিটামিন-ডি আরোহণের জন্য রোদে গিয়ে বসতে পারে, আর শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ বলেই একা একা বাস থেকে নামতে পারে, আবার উঠতেও পারে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- স্বাস্থ্যসেবা
- বৃদ্ধাশ্রম