ফজলে হাসান আবেদের বাংলাদেশ
তিনি জন্মেছিলেন ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল সিলেটের বানিয়াচংয়ের এক প্রখ্যাত জমিদার পরিবারে। চলে গেছেন ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর। রেখে গেছেন তার কাজ, তার প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক। মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন তিনি। বলছি ফজলে হাসান আবেদের কথা। বই লেখার সূত্রে টানা কয়েক বছর তার কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়েছিল। এক সঙ্গে ঘুরেছি বাংলাদেশের বহু স্থানে। দেখেছি-জেনেছি ব্র্যাকের কার্যক্রম। জানার সুযোগ হয়েছে তার আরও বহুবিধ দিক।
আলোচনার বিষয় ছিল বাংলাদেশের রাজনীতি। সেই সূত্র ধরে এলো শাল্লা ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রসঙ্গ। স্বাধীন বাংলাদেশে ব্র্যাকের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এলাকা সুনামগঞ্জের শাল্লায়। ব্র্যাক কাজ করবে তার এলাকা পুনর্গঠনে, এতে তিনি খুশি হয়েছিলেন। গাড়ি চলছে উত্তরবঙ্গের পথে। কথা বলছিলাম ২০০৪ সালে ১৯৭২ সাল নিয়ে। কীভাবে স্মৃতিতে আছে সেই সময়টা? স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মৃদু হাসি মুখে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে যা বললেন তা হয়ত হুবহু উদ্ধৃত করতে পারছি না। তবে মূল কথাটা ছিল এমন, ‘সেসব দিনের কোনোটাই আসলে আমার কাছে স্মৃতি কথা নয়। এই তো সেদিনের কথা বা এখনও সেই কাজের মধ্যেই আছি। আমি এখন সেই সব দৃশ্য ছবির মতো চোখের সামনে দেখছি।’
৩৩-৩৪ বছর তো কম সময় না। সেই বাংলাদেশের সঙ্গে এখনকার বাংলাদেশের অনেক পার্থক্য। এখন আমরা এই যে গাড়িতে যাচ্ছি, যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, তা তো ১৯৭২ সালে কল্পনাতেও ছিল না। আবার হেসে বলতে শুরু করলেন, ‘কল্পনায় তো এই বাংলাদেশ নয়, এর চেয়ে সমৃদ্ধ সুখী বাংলাদেশ ছিল। ১৯৭২ সালে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে শাল্লায় যেতাম। তখনও কষ্ট অনুভব করিনি, সেকথা মনে করে এখনও কষ্ট পাই না।’