নিজেই যখন নিজের পরিবারের খুনি
ঘটনা শোনার পর কিছুক্ষণ নড়ার শক্তি থাকে না, কিছু বলার জন্য ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না, অবশ লাগে, অবিশ্বাস্য মনে হয়, স্তব্ধ হয়ে মনে প্রশ্ন জাগে, কীভাবে সম্ভব? ১৯ এবং ২১ বছর বয়সের দুই ভাই পরিকল্পনা করে তাদের পরিবারের চারজন মানুষকে মেরে তারপর নিজেরাও আত্মহত্যা করেছে। পারিবারিক ছবি দিয়েছে সব পত্রিকায়, কী সুন্দর একটি পরিবার। সবার চোখেমুখে সরল হাসি। আমার, আপনার পরিবারের মতোই খুব সাধারণ, আমাদের সবারই এমন দু-একটা ছবি আছে যা আমরা খুব যত্নে তুলে রেখেছি। কিন্তু এই হাসিখুশি, খুব স্বাভাবিক, সাধারণ পারিবারিক ছবির পেছনে কি গভীর দুঃখ লুকানো ছিল কেউ বুঝতে পারেনি, তারা নিজেরাও হয়তো বুঝে উঠতে পারেননি তাদের এই অকাল পরিণতি।
২০১৬ থেকে দুই ভাই অবসাদে ভুগছিল। এখানে বলে রাখা ভালো, ডিপ্রেশনে থাকলেই খুন করার সাহস বা মানসিকতা হবে এমন কোনো কথা নেই। তাহলে আর কী কী বিষয় ওদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল? ওরা কি কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপি নিতে গিয়েছিল কখনও? খবর পড়ে জানলাম ওরা ডিপ্রেশনের ওষুধ খেত, কয়েকবার হাত কেটে ফেলার কারণে হাসপাতালেও দৌড়াতে হয়েছে অর্থাৎ পরিবারের সবাই নিশ্চয় জানত তাদের মানসিক অসুস্থতার কথা। প্রথমত, ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ফারহান লেখেন, তার ভাই বলেছেন, আমরা যদি এক বছরে সবকিছু ঠিক করতে না পারি, তবে আমরা নিজেদের ও পরিবারকে হত্যা করব। দ্বিতীয়ত, পরিবারকে লজ্জা ও কষ্ট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দুই ভাই সবাইকে হত্যা করে নিজেরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে। নোটে আরও লিখেছেন- 'আই ডিড এভরিথিং রাইট, এভরি লিটল ... থিং রাইট, অ্যান্ড আই অ্যাম স্টিল জাস্ট অ্যাপাথেটিক।' প্রথম লাইনটাই খুব কষ্টদায়ক, ছেলেটা সবকিছু চেষ্টা করেছিল কিন্তু সুখী হতে পারেনি। কী অসহায় একটা অবস্থান! আহারে এটাই হয়তো ছিল ওর প্রতিদিনের সংগ্রাম!