করোনায় পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে
করোনা মহামারির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে দেশে বেড়েছে পারিবারিক সহিংসতা। বিশেষ করে এই সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট, স্বাস্থ্যগত সমস্যা, আপনজনদের মধ্যে যোগাযোগ কমে যাওয়া, বিনোদনের সুযোগ না থাকা এবং বাধ্য হয়ে ঘরে আটকে পড়ায় এই সহিংসতা বেড়েছে।
রাজধানীর মিরপুর-১৩ নম্বরে শাহান শাহ ডেকোরেটর চালাতেন জব্বার মিঞা। করোনার কারণে গত মার্চ থেকে ডেকোরেটর বন্ধ থাকায় তাঁর রোজগার বন্ধ। বর্তমানে তিনি নতুন কোনো ব্যবসা করতে চান। এর জন্য বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দিতে তিনি স্ত্রী মরিয়মের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। মরিয়মের বাবা মারা গেছেন। ভাই রিকশা চালান। এত টাকা মরিয়ম কোথা থেকে জোগাড় করবেন, দিশা পাচ্ছেন না। কালের কণ্ঠকে মরিয়ম জানান, করোনার কারণে কাজ না থাকায় তাঁর স্বামী তাঁকে যৌতুক দিতে চাপ দিচ্ছেন। টাকা দিতে পারছেন না বলে তাঁকে মারধরও করছেন।
এদিকে করোনার কারণে খুলনার বাগমারা এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি মুহম্মদ জহির কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। স্ত্রী গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। বর্তমানে তা-ও বন্ধ। বড় মেয়ে ঐশীর বয়স ১৪ বছর। ছোট আরো দুই ছেলে রয়েছে। করোনার এই সময়ে কাজ হারিয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য তিন বেলা খাবার জোটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। একই এলাকার ৫০ বছর বয়সী কাজী রইস শেখ বহুদিন ধরে ঐশীকে বিয়ে করতে চাইলেও মুহম্মদ জহির রাজি ছিলেন না। গত মাসে রইস শেখের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে মেয়ে ঐশীকে তাঁর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন। এই টাকা দিয়ে রিকশা কিনে বর্তমানে তা চালাচ্ছেন মুহম্মদ জহির।