কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম ও দৈনন্দিন টুকিটাকি

দৈনিক আজাদী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২০, ০৭:০৩

.tdi_2_fe7.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_fe7.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});: দৈনিক আজাদী এবং পাঠকদের আহাজারি। : অসংখ্য টেলিফোন পেয়েছি দৈনিক আজাদী পাঠকদের। প্রশ্ন একটাই পত্রিকা বের হচ্ছে না কেন? এই কেন শব্দটির উত্তর দেওয়ার তথ্য এবং সাহসতো আমার ছিলো না। সম্মান ও মর্যাদায় আঘাত লাগলে মানুষ কি এগুতে পারে? দেশের প্রাচীনতম দৈনিক আজাদী এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকাশিত প্রথম দৈনিক আজাদী আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্যই প্রকাশনা স্থগিত রেখেছিলেন। তবে চট্টগ্রামের মানুষ এই পত্রিকাটিকে কতোটা ভালোবাসেন সে প্রমাণতো পেলাম এ কয়দিনে। ভালোবাসার এই স্থানটি অর্জন করতে ধীর প্রত্যয় নিয়ে এগুতে হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ থেকে। ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক, প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ হয়ে এম.এ. মালেক। সময় ও সভ্যতার প্রয়োজনে দৈনিক আজাদী প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো। সে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে গিয়ে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির আরাধনার মধ্য দিয়ে সমাজ বিশ্লেষণ করে এতদূর এসেছে পত্রিকাটি। যারা সৃষ্টি করেন তারাই বোঝেন প্রসব যন্ত্রণাটা কেমন। আর সেজন্যই মনের যন্ত্রণা চেপে রেখে দেশ, জাতি, সমাজ ও মানব কল্যাণের জন্যই পত্রিকাটি পাঠক সমীপে উপস্থাপিত হয়েছে। : আজাদী কি শুধুই পত্রিকা? : প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল খালেক। তিনি ছিলেন এ বাংলার প্রথম মুসলমান বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। তিনি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন পিছিয়ে পড়া মানুষদের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির মাধ্যমে টেনে তোলার জন্য। একই সাথে চিন্তা ছিলো মানুষের কল্যাণ। এ প্রসঙ্গে জামে মসজিদ এবং ভিক্ষুকদের কথা বলা প্রয়োজন। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন জামে মসজিদ এ গিয়ে। দিনের আলোয় তিনি দেখতেন একদল ফকির মসজিদ গেটে ভিক্ষা করছেন। এই দৃশ্য দেখে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। এরপর তিনি চিন্তা করলেন কেমন করে এই ভিক্ষুকের হাতকে কর্মীর হাতে পরিনত করা যায়। এই চিন্তা করে তিনি ভিক্ষুকদের আহ্বান করলেন দৈনিক আজাদী অফিসে আসার জন্য। তারা এলে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব অসুস্থদের আলাদা করলেন। তাদেরকে জেনারেল হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন। অন্যদের হাতে তুলে দিলেন ১০টি করে পত্রিকা। ভিক্ষুকরা ভিক্ষার পরিবর্তে পাঠকদের সামনে গেলেন পত্রিকা নিয়ে। সাধারণ মানুষরা খুশী হলেন ভিক্ষুক হলেন পত্রিকা হকার। তারা পত্রিকা বিক্রি করে টাকা দিতে এলেন আজাদী অফিসে। তখন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব টাকাগুলো তাদের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, এটা তোমাদের প্রাথমিক পুঁজি। এভাবে তিনি বেশ কিছুদিন পত্রিকা দিলেন ভিক্ষুকদের। তারা পরিনত হলেন হকার হিসেবে। এরপর তারা পত্রিকা অল্প মূল্যে কিনে পরিপূর্ণ হকার হলেন। যারা অসুস্থ ছিলেন তারাও সুস্থ হয়ে পত্রিকা হকারে পরিণত হলেন। ভিক্ষার হাত হলো কর্মীর হাত। এভাবে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব ক্ষুদ্র পুঁজির সূচনা করলেন। এবার বলছি একজন হকারের কথা। তিনি আবদুল মালেক। তখন ২২ বছরের যুবক। যক্ষ্‌রোগে ভুগছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তাকে জেনারেল হাসপাতালে রেখে দীর্ঘ চিকিৎসা করান। সুস্থ হলে তিনি পত্রিকা হকারে পরিণত হন। বাঙালির জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম শুরু হলে তিনি শ্রমিক নেতা এম.এ. হান্নানের সাথে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আগরতলা মামলার সময় তিনি আগ্রাবাদ এলাকায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে মুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম এলে আগ্রাবাদ ছাত্রলীগের সাথে তিনি শাহজাহান হোটেলে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেন। ছাত্রনেতা সাবের আহমদ আজগরী ও তোহা গাজী বঙ্গবন্ধুর সামনে হকার নেতা আবদুল মালেকের পরিচয় তুলে ধরলে বঙ্গবন্ধু তাকে জড়িয়ে ধরেন গভীর মমতায়। সেই মালেক ভাই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন নোয়াখালী অঞ্চলে নিজ জন্মভূমিতে। একটি পত্রিকা শুধু সংবাদ পরিবেশনই কি মৌলিক দায়িত্ব? ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক এবং দৈনিক আজাদী পালন করেছিলেন মানবিক কাজ। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষাটা তিনি পত্রিকার মাধ্যমে পালন করেছেন। এতো গেলো একটা দিক। দৈনিক আজাদী প্রকাশ করে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আরো উপরে তুলে ধরতে বেশ শ্রম দিয়েছিলেন। লেখকদের উৎসাহিত করার জন্য তিনি নিজে এবং সতীর্থদের বলতেন, লেখাগুলো ঠিক করে যেন ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে বিভিন্ন বয়সী লেখকরা উৎসাহিত হয়ে প্রকৃত লেখকে পরিণত হতে পেরে ছিলেন। তখনকার সময়ের কথা ভাবলে মনে হবে অনেকটা বিরূপ পরিস্থিতিতে পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। মেধা ও মননের দিক থেকে পত্রিকা প্রকাশতো তখন লাভজনক ছিলো না। কিন্তু তারপরও সমাজ ও সভ্যতাকে টেনে নিতে সৃজনশীল মানুষ পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন এবং এখনো করছেন। : দৈনিক আজাদী বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার সম্মুখ যোদ্ধা। : কেন এই প্রসঙ্গটি আনতে হলো? ১৯৬২’তে যখন শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হলো তখন এই চট্টগ্রামের আজাদী ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু যখন ৬ দফা ঘোষণা করলেন চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে তখন আজাদী ছিলো ৬ দফার পক্ষে ৬ দফা, বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য আজাদীর সংবাদ, সংবাদ বিশ্লেষণ ছিলো বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার পক্ষে। সেই যে শুরু আজাদী তার নৈতিক অবস্থান থেকে কখনো পিছু হটেনি। ১৯৬৮-৬৯ এর গণ্য অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ দৈনিক আজাদীর শব্দ চয়ন ছিলো বাঙালিদের পক্ষে। আরো কিছু কথা বলা প্রয়োজন যে, ১৯৭১-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত দৈনিক আজাদী স্বাধীনতার কথা বলেছে। পাকিস্তানীদের কারণে গণহত্যার ফলে কিছু সময় দৈনিক আজাদী বন্ধ ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ সময় পুনরায় দৈনিক আজাদী প্রকাশ পায়। তখন পত্রিকার সাংবাদিক সমাজ এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করতেন যা পড়ে শহর ও গ্রামের সাধারণ মানুষ বুঝতে পারতেন যে মুক্তিযোদ্ধাদের আগমন হয়েছে, ঘাতকদের ওপর আঘাত হানছে। কিছু শব্দ অর্থাৎ দুষ্কৃতকারী, ভারতীয় চর, পাকিস্তানের শত্রু- এসব শব্দ দেখলে সাধারণ মানুষ বুঝে নিতেন মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করছে। এসব সংবাদ পড়লে মানুষ সাহস পেতেন, প্রকৃত সংবাদ পেতেন। সে সময় দৈনিক আজাদীর সাংবাদিকরা এ ধরনের সংবাদ বেশি প্রকাশ করতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক আজাদী পালন করেছে ঐতিহাসিক ভূমিকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক আজাদী পালন করেছে বিশেষ ভূমিকা এবং ঐতিহ্যের তিলক পরেছে দেশের অর্থাৎ স্বাধীন দেশের প্রথম প্রকাশিত দৈনিক হিসেবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় দৈনিক আজাদী পালন করেছে সাহসী ভূমিকা। এজন্য কুমিল্লা এবং সিলেটে দৈনিক আজাদী পোড়ানো হয়েছিলো। আজাদী এখন গবেষণার বিষয় ও বিশ্লেষণের বিষয়। পত্রিকা পুন: প্রকাশের মধ্য দিয়ে পাঠক সমাজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছে, প্রাণের আজাদী এখন আমার হয়ে হাতে এসেছে। লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।.tdi_3_fd1.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_fd1.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও