কিটের অনুমোদন পেতে ফের কাগজপত্র জমা দেবে গণস্বাস্থ্য
সম্প্রতি নতুন একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে ওধুষ প্রশাসন অধিদফতর। সেই গাইডলাইনের আলোকেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি কিটের নিবন্ধন দেয়নি ওষুধ প্রশাসন। তবে সেই গাইডলাইন সম্পর্কে কিটের কার্যকারিতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) অবগত করেনি ওষুধ প্রশাসন। পাশাপাশি বিষয়টি জানানো হয়নি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকেও।
নতুন গাইডলাইনের আলোকে কাগজপত্র পুনর্বিন্যাস করে নিবন্ধনের জন্য ওষুধ প্রশাসনের কাছে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। শনিবার (২৭ জুন) সকালে বিষয়টি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।
তিনি বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন নতুন একটা গাইডলাইন দেখিয়েছে। তারা বলেছে, সেটার আওতায় আসতে হবে। নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ৩০টা পজিটিভ স্যাম্পল হতে হবে, ৮০টা নেগেটিভ স্যাম্পল হতে হবে এবং সেনসেটিভিটি স্পেসিফিক্যালি ৯০-এর বেশি হতে হবে।’ ড. বিজন বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমরা যে কাজ করেছি, সেটা আমাদের জন্য যথেষ্ট ছিল। এই গাইডলাইন আমাদেরকে আগে জানানো হয়নি, বিএসএমএমইউ টিমকেও জানায়নি। এখন এটার আলোকে আমাদের কাজ আবার রি-অ্যারেঞ্জ করতেছি।’ গাইডলাইনের চেয়ে আপনাদের কিটের ফল ভালো, নিবন্ধন দিল না কেন ওষুধ প্রশাসন? ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘এটা বলে লাভ নেই। গাইডলাইন যেহেতু আমাদের এখানে আসছে, দেখি এর আলোকে আমরা কী করতে পারি। নতুন করে কিছু করব না, পেপারসগুলো রি-অ্যারেঞ্জ (কাগজপত্র পুনর্বিন্যাস) করব আর কী। ওরা বলছে ৩০, আমরা ৩০০ করছি। সুতরাং সেই দুশ্চিন্তা আমাদের নেই।
এটা বিএসএমএমইউকেও ফলো করতে হবে মনে হচ্ছে। এটা তাদেরকেও জানানো হয়েছে। তারাও হয়তো এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। নতুন গাইডলাইনে যা বলেছে, তা অবশ্যই আমরা অর্জন করতে পারব। তবে এটা আগে জানলে আমাদের আরও সহজ হতো।’ প্রায় এক মাস গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা শেষে গত ১৬ জুন ওষুধ প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় বিএসএমএমইউ। এর ৯ দিন পর ২৫ জুন ওষুধ প্রশাসন জানায়, গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের নিবন্ধন দেয়া সম্ভব নয়।
এর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনা শনাক্তে র্যাপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবনের পর ২৬ এপ্রিল তা হস্তান্তরের আয়োজন করে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ছাড়া সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান তা গ্রহণ করতে যায়নি। এই কিটের অনুমোদন দেয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সরকারের ওষুধ প্রশাসন। তখন তারা বলেছে, সিআরও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (মধ্যস্বত্বভোগী) কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার পর তা তারা অনুমোদন দেবেন। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, কোনো মধ্যস্বত্বভোগী সিআরও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন না। তিনি বিএসএমএমইউসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার কথা বলেছিলেন।