নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিদ্যালয়ের জমি নিজেদের দাবি করে সেখানে ঘর তুলতে দিচ্ছেন না স্থানীয় ভূমিদস্যুচক্র। এ কারণে চলতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ায় খোলা মাঠেই পাঠদান কার্যক্রম চলছে সেখানে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর কাদামাখা খোলামাঠে ক্লাস নেয়ার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলেও পাঠাচ্ছেন না। উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার হাটাব টেকপাড়া এলাকার হাটাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এ ঘটনা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান মোল্লা জানান, ৯৭ বছর পূর্বে ৫২নং হাটাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। হাটাব টেকপাড়া এলাকার সমাজসেবক আইনুদ্দিন ওরফে আনু প্রধান বিদ্যালয়ের জন্য কাঞ্চন মৌজার আরএস ৬৩৬৪ দাগে ৩০ শতাংশ জমি ওয়াক্ফ মূলে দান করেন। পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধুরী আরো সাড়ে ৭ শতাংশ ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি কামালউদ্দিন আহমেদ ১৩ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ে দান করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪শ’। দুটি আলাদা ভবনে ৬টি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও পুরাতন ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরায় দু’বছর পূর্বে সেটি ভেঙে অস্থায়ীভাবে পাশে অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়। চলতি বছর বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুন্না এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী শেডটি ভেঙে দেয়। পরে সেখানে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে চাইলে একই এলাকার সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল কাইয়ুম, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মুকুল হোসেন, কবির হোসেন, মিলন, দুলালসহ সংঘবদ্ধ একটি ভূমিদস্যুচক্র স্কুলের ৩০ শতাংশ জমি নিজেদের দাবি করে নির্মাণকাজে বাধা দেন। এ কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ আপত্তি করা সম্পত্তির বাইরে পাকা ভবন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আপাতত ক্লাস করার জন্য ভেঙে ফেলা ভবনের জায়গায় একটি শেড করতে চাইলে সেটাতেও বাধা দেন চক্রটি। এ কারণে চলতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়াতেও খোলা মাঠেই শিশু, তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে সে স্কুলে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর কাদামাখা খোলামাঠে ক্লাস করানোর কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলেও পাঠাচ্ছেন না।বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি আতিকুর রহমান দোলন বলেন, আরএস রেকর্ডমূলে স্কুলের নামে সাড়ে ৫০ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাইয়ুম প্রায় ২৫ বছর স্কুলের সভাপতি ছিলেন। আর একশ বছর যাবৎ জমিতে স্কুল রয়েছে কখনোই তারা জমি দাবি করেন নি। এখন তারা ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করে জমি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় আছেন।অভিযুক্ত মুকুল হোসেন বলেন, আরএস রেকর্ডে স্কুলের নাম থাকলেও সিএস ও এসএ পর্চায় আমাদের পূর্বপুরুষের নাম রয়েছে। জমি আনু প্রধানের না, আমাদের। ন্যায় বিচারের আশায় আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলায় যে রায় আসবে সেটা আমরা মেনে নেবো। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদা আক্তার বলেন, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি স্কুলের জমি তারা তাদের নিজের বলে দাবি করছেন। সেজন্য জমির দাবিদাররা সেখানে নতুন ভবন করতে দিচ্ছে না। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করানোর বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। আমি বিষয়টি দেখছি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, শিশুরা খোলা মাঠে পাঠদান করছে সে ব্যাপারে আমাকে কেউ বলেনি। আর শিশুরা খোলা মাঠে ক্লাস করবে সেটা কোনোভাবে মানতে পারছি না। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.