
তামিম ইকবাল। ছবি: প্রিয়.কম
তবে কি আইপিএলেই ‘দুর্ভাগা’ তামিম?
আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:৩১
(প্রিয়.কম) ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সহযোগী সদস্য নেপালের সন্দ্বীপ লামচানে ঠিকই দল পেয়েছেন আসন্ন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। নেপালি এই ক্রিকেটারকে ২০ লাখ রুপিতে কিনে নিয়েছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। অবাক করার মতো খবর হচ্ছে, নিলামেই তোলা হয়নি তামিম ইকবালের নাম! সেখানে দল পাওয়া তো দূরের কথা। তামিম ছাড়াও নিলামের টেবিলে ওঠেনি আইপিএল খেলতে আগ্রহী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান ও আবুল হাসান রাজুর নাম। বর্তমান সময়ের সেরা ওপেনারদের তালিকা করলে তামিমের নামটা উপরের দিকেই থাকবে।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানদের একজন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনার। রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা। কেবল আন্তর্জাতিক মঞ্চেই নয়, তামিম তার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোতেও। তবুও বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত একাদশতম আইপিএলের নিলামে অবিক্রিত রইলেন তিনি। প্রশ্ন উঠতেই পারে, শুধু কি আইপিএলেই অভাগা তামিম?
এই প্রশ্নের উত্তর কিছুটা পাওয়া যাবে একটু পেছন ফিরে তাকালে। সময়টা ২০১২। সেই মৌসুমের আইপিএলে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছিলেন তামিম। সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া শিবিরে জায়গা হয়েছিল তার। কিন্ত পুরোটা সময় কেটেছে ডাগ আউটে সাইড বেঞ্চে বসে। কোনো ম্যাচ না খেলে ধরেছিলেন দেশের বিমান। স্মৃতি কেবল পুনের জার্সি গায়ের চাপিয়ে হাসিমুখে আনুষ্ঠানিক ফটো সেশন। সেখানেই শেষ! এরপর বার কয়েক নিলামে নাম উঠলেও কেউ আগ্রহ দেখায়নি তামিমের প্রতি।
যদিও তখনকার তামিম আর বর্তমানের তামিমে বিস্তর ফারাক। সেই তামিম ছিলেন না ধারাবাহিক। প্রথম বল থেকেই মেরে খেলতে চাইতেন। এভাবে কখনও সফল হতেন, আবার কখনও ব্যর্থ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলে ফেলেছেন তামিম। হয়ে উঠেছেন ধারাবাহিক ও পরিণত। যার প্রমাণ তিনি দিয়ে আসছেন গত তিন বছর ধরে।২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪ ম্যাচে ৫২.৪৮ গড়ে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ২০৪৭ রান। গড়ের দিক থেকে যা তাকে জায়গা করে দিয়েছে সেরা আট ব্যাটসম্যানের তালিকায়।
গেল দুই বছরে ২৪ ম্যাচ খেলে ৬১.৭৬ গড়ে ১২৭৬ রান করেছেন তামিম। এই সময়ে ৩০ ম্যাচে ৫২.৯৫ গড়ে ১১১২ রান করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স। এ ছাড়া মার্টিন গাপটিল, শিখর ধাওয়ানরাও তামিমের চেয়ে পিছিয়ে।
ঘরের মাঠে সদ্যসমাপ্ত ত্রিদেশীয় সিরিজেও তামিম হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। পাঁচ ম্যাচে তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ৬৩.০০ গড়ে তার সংগ্রহ ২৫২ রান। এমন দুর্দান্ত ফর্মে থাকার পরও তামিমকে তোলা হয়নি নিলামে। এই সময়ে ১৮ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তামিম। ২৯.৪৭ গড়ে তার সংগ্রহ ৪৭১। আছে একটি সেঞ্চুরিও। এ ছাড়া পিএসএলে ১১ ম্যাচে চার হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৫.১২ গড়ে তার রান ৩৬১। বিপিএলের সর্বশেষ আসরেও ছিলেন ফর্মে। ইনজুরি কাটিয়ে বিপিএলে ফিরে ১০ ম্যাচে ৩৩২ রান করেছেন ৩৬.৮৮ গড়ে। এমন ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্সের পরও কেন সবচেয়ে জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগ আইপিএলে উপেক্ষিত তামিম?
তামিম-সাব্বিররা উপেক্ষিত থাকলেও দল পেয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিবকে এবারের আইপিএলের জন্য ধরে রাখেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২ কোটি রুপিতে তাকে দলে টেনেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। অন্যদিকে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজের নতুন ঠিকানা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
প্রিয় স্পোর্টস/কামরুল