ছবি সংগৃহীত

মিরিঞ্জাইটিসের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৭, ১৫:৪৫
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭, ১৫:৪৫

মিরিঞ্জাইটিস প্রায়ই শিশুদের ক্ষেত্রে হয়। ছবি : সংগৃহীত।

(প্রিয়.কম) মিরিঞ্জাইটিস এক ধরনের কানের সংক্রমণ যার ফলে কানের পর্দায় ছোট ফোলা বা ফোসকা হতে দেখা যায়। এর ফলে কানে প্রচুর ব্যথা হয়। মধ্যকর্ণে ফোসকা হলে যে ইনফ্লামেশনের সৃষ্টি হয় তার ফলেই প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ফোসকা যখন বড় হতে থাকে তখন ব্যথা ছাড়াও আংশিকভাবে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পায় ২-৩ দিনের জন্য। কানের পর্দার আরেকটি নাম হচ্ছে টিম্পেনিক মেমব্রেন যা বহিঃকর্ণ এবং মধ্য কর্ণের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করে এবং এটি মস্তিস্কে শব্দ সংকেত পাঠানোর জন্য দায়ী। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে কানের ভেতরে ফুলে যাওয়া ও চুলকানির অনুভূতি হয়। ফোসকায় পুঁজ জমা হলে কানের পর্দায় সূক্ষ্ম ব্যথা হয়।

মিরিঞ্জাইটিসের কারণ

মিরিঞ্জাইটিস হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে Streptococcus pneumoniae and Mycoplasma pneumonia নামক ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া কানের পর্দায় প্রবেশ করার পর আস্তে আস্তে বংশবৃদ্ধি করে এবং সংক্রমণ ও ফোসকা সৃষ্টি করে। কেউ যখন পাবলিক সুইমিং পুল ব্যবহার করে তখন তার কর্ণপটহ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। সুইমারস এয়ারস (acute otitis externs)  এর কারণেও হতে পারে কানের ইনফেকশন এবং ইনফ্লামেশন।

মিরিঞ্জাইটিসের লক্ষণ

আক্রান্ত কানে ব্যথার পাশাপাশি চুলকানি ও জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হতে পারে। কখনো কখনো সাদা বা হলুদ রঙের পুঁজের মত তরল নির্গত হতে পারে। ফুসকুড়ি যতদিন থাকবে ততদিন পর্যন্ত উপসর্গগুলো থাকবে। এছাড়াও সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর, মাথাব্যথা এবং ২-৩ দিনের জন্য আংশিক শ্রবণক্ষমতা হ্রাস পাওয়া। সংক্রমণ ভালো হয়ে যাওয়ার পর ও কয়েকদিন ব্যথা থাকতে পারে।

যদি ফোসকা বিদীর্ণ হয়ে যায় তাহলে তরল নির্গত হয় এবং এর সাথে রক্ত ও থাকতে পারে। কানে স্পর্শ করলে উষ্ণ ও নমনীয় মনে হতে পারে। মিরিঞ্জাইটিস এর প্রাথমিক অবস্থায় টিম্পেনিক মেমব্রেন লাল দেখাবে এবং এর ভেতরে ছোট রক্তনালী দেখা যাবে। চিকিৎসক কানের পর্দার পেছনে সংক্রমণের উপাদান দেখতে পাবেন। মিরিঞ্জাইটিস প্রায়ই শিশুদের ক্ষেত্রে হয় এবং কখনো কখনো বয়স্কদের ও হতে দেখা যায়।  

মিরিঞ্জাইটিস নির্ণয়

আপনার চিকিৎসক কানের ব্যথার লক্ষণ শুনবেন এবং কানের পর্দার ফোসকা পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি ব্যাকটেরিয়া নির্ণয়ের জন্য ভেতরের তরলের টেস্ট করাবেন।  

মিরিঞ্জাইটিসের চিকিৎসা

অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের জন্য বা ড্রপ হিসেবে ব্যবহারের জন্য দেবেন চিকিৎসক। ব্যাকটেরিয়া পুরোপুরি নির্মূলের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের সম্পূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। ব্যথা কমানোর জন্য অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ঔষধ ও সেবন করতে হতে পারে। এটি ছোঁয়াচে তাই উপসর্গ দূর না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই উচিৎ। চিকিৎসক কানের পর্দা থেকে পুঁজ পরিষ্কার করে দেবেন। বিরল ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে (মিরিঞ্জোপ্লাস্টি) ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা বের করার  প্রয়োজন হতে পারে।  

মিরিঞ্জাইটিস প্রতিরোধ

·         সংক্রমিত পরিবেশ থেকে শিশুকে দূরে সরিয়ে রাখুন।

·         শিশুকে নিউমোভেক্স টিকা দেয়া প্রয়োজন

·         খাওয়ার আগে শিশু যেন হাত ধুয়ে নেয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

সূত্র : ডিজিজপিকচার

 সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী