
ছবি সংগৃহীত
মাইগ্রেনে স্মৃতিশক্তি হ্রাস হয় না
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৩, ০৭:১১
মাইগ্রেন হচ্ছে একধরণের মাথাব্যথা। সাধারণত মাথার একদিকে হয় বলে প্রচলিত থাকলেও, মাথার দুদিকেও হতে দেখা গেছে। মাইগ্রেন আক্রান্ত ব্যক্তি শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য ইত্যাদি সহ্য করতে পারেন না। আবার কিছু খাবার যেমন চকলেট, আঙুরর রস, পনির ইত্যদির প্রভাবেও অনেকের ক্ষেত্রে এই ভয়ঙ্কর মাথাব্যাথা শুরু হতে পারে। তবে মাইগ্রেনে শুধু মাথাব্যাথাই হয়না, তার সঙ্গে আরো কয়েকটি স্নায়বিক উপসর্গ হয়ে থাকে,যেমন কিছু আলো বা শব্দের অনুভুতি। উপসর্গ অনুযায়ী মাইগ্রেনের মধ্যেও অনেক রকমফেরও আছে। মাইগ্রেন ব্যথার সাথে বহু ধরনের উপসর্গ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রাধান হচ্ছে, চোখে অস্বচ্ছ দেখা, চোখের সামনে ছোট ছোট আলোর বিন্দু দেখা, বমি বমি ভাব, মাথার ভিতরে ধপ ধপ করা ইত্যাদি। কারো কারো মতে সেরকম কয়েকটি মাইগ্রেনের উপসর্গ থাকলে মাথা ব্যাথা না থাকলেও মাইগ্রেন হয়েছে বলা যেতে পারে। মাইগ্রেন মাথাব্যথার সঠিক কারণ আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি তবে, বলা হয়ে থাকে যে, ব্রেনের ভিতরে রক্তবাহী নালীসমূহ কোন কারণে সংকুচিত হয়। এটা হলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের তারতম্যের জন্যই এই প্রচণ্ড ধপ ধপ করে মাথাব্যথা শুরু হয়। অনেকের ক্ষেত্রেই বমি না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যথা কমে না। মাইগ্রেন মাথাব্যথা একবার শুরু হলে কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত একাধারে চলতে পারে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই ব্যথার কারণে কাজ বা পড়ালেখার শুধু নয়, স্বাভাবিক জীবনযাত্রাতেও ব্যাঘাত ঘটে ভীষণ ভাবে। এই ভয়াবহ ব্যথা এবং উপসর্গ গুলোর কারণেই এতদিন প্রচলিত ছিল যে মাইগ্রেন মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক এক অসুখ। অনেকে এমনকি এটাও মনে করতেন যে মাইগ্রেন মস্তিষ্কে বড় কোনও অসুখের পূর্বাভাস। আবার অনেক গবেষক মনে করতেন দীর্ঘদিন মাইগ্রেনের ব্যথায় ভুগলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে রোগীর স্মৃতি শক্তি ক্রমশ কমে আসে। অর্থাৎ মাইগ্রেনের রোগীরা স্মৃতিশক্তি জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে তাঁদের সকলকেই স্বস্তি দিতে কিছুদিন আগে এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে নতুন এক তথ্য। যুক্তরাজ্যের ব্রিগহাম অ্যান্ড উইম্যান’স হসপিটালের গবেষকরা জানিয়েছেন, মাইগ্রেনের সঙ্গে কোনো কিছু মনে রাখতে না পারার সম্পর্ক নেই। কিছুদিন আগেও স্মৃতিবিভ্রমের জন্য মাইগ্রেনকে দায়ী করা হতো। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা এই দুইয়ের মধ্যে কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাননি। ৪৫ বা তারও বেশি বয়সের প্রায় ৪০ হাজার নারী রোগীর মেডিক্যাল রিপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তারা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। এই গবেষণার ফল চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছে বিডব্লিউএম। উল্লেখ্য যে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মাইগ্রেনে ভুগে থাকেন।