
ছবি সংগৃহীত
দেশে কর্মসংস্থান গুরু শরীফ আজিজের গল্প
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৫, ০৬:৩৫
(প্রিয়.কম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরীফ আজিজ, পিএসসি। বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এক অগ্রপথিক নায়কের নাম। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহ, রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এবং রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের এডিসি ছিলেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিশেষ সহকারি (পিএস) ছিলেন। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯৫ সালে নিজের সক্ষমতার কথা চিন্তা করে শুরু করেন একটি সিকিউরিটি কোম্পানি। চার বছর পর ১৯৯৯ সালে 'এলিট ফোর্স' নামে একটি নিরাপত্তা কোম্পানি এককভাবে চালু করেন। ২০১৫ সালে এসে এই প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ১৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ৫ শতাধিক নিরাপত্তা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান থাকলেও এলিট ফোর্স প্রথম সাড়িতে কেন? আর এখানে চাকরি করার যোগ্যতাই বা কি? শরীফ আজিজের সাথে কথা বলে উত্তর খুঁজেছেন এম. মিজানুর রহমান সোহেল।
প্রিয়.কম: এলিট ফোর্সের যাত্রা শুরু কিভাবে?
শরীফ আজিজ: আমি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর পাঁচ বন্ধু মিলে একটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করি। আমাদের মনে হয়েছে এ জাগায় আমাদের পারদর্শিতা ভালভাবে দেখাতে পারবো। আমিসহ কর্নেল আযম, কর্নেল রশিদ, ইকবাল শফি, মেজর কামালের উদ্যোগে ইনটিগ্রেটেড সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড বা আইএসএসএল নামের একটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান চালু করি। এরপর নিজের কিছু আইডিয়া বাস্তবায়নের জন্য ১৯৯৯ সালে নিজ উদ্যোগে মাত্র ৭ জন গার্ড নিয়ে 'এলিট ফোর্স' নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি।
প্রিয়.কম: সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্ষেত্র কোনগুলো?
শরীফ আজিজ: বাংলাদেশে প্রাইভেট ব্যাংকের সংখ্যা ৫৭টি। এটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৪০টি ব্যাংকের সকল নিরাপত্তা বিষয়ে সেবা দিতে পারছি। এর মধ্যে বিদেশি সবগুলো ব্যাংকের সিকিউরিটি সেবা একমাত্র আমরাই দিচ্ছি। সিকিউরিটি ব্যবসার জন্য ব্যাংক আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ একেকটি ব্যাংকের সারা দেশে শাখা এবং এটিএম বুথের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বিপুল সংখ্যক লোক প্রয়োজন হয়। মোবাইল অপারেটরদের দেশজুড়ে বিটিএস (টাওয়ার) পাহারা দেওয়ার জন্যও অনেক মানুষের প্রয়োজন। বাংলাদেশে ব্যাংক এবং মোবাইল অপারেটরদের কারণে কর্মসংস্থানের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রিয়.কম: বাংলাদেশে সিকিউরিটি সেবার পরিধি বাড়ল কবে থেকে?
শরীফ আজিজ: ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে সিকিউরিটি সেবার পরিধি বৃদ্ধি পায়। এ ঘটনা পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্র সরকার 'হোমল্যান্ড সিকিউরিটি' নামে একটি বিভাগ চালু করে। বাংলাদেশেও তখন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিকিউরিটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠানমুখি হতে শুরু করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে সিকিউরিটি সেবার পরিধি অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
প্রিয়.কম: আপনাদের কাজের ক্ষেত্রগুলো কি কি?
শরীফ আজিজ: ব্যাংক ও তাদের বুথের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমাদের গার্ড নিচ্ছে। বাসাবাড়ি, মার্কেট, শিল্পপতি, গার্মেন্টস, পাওয়ার প্ল্যান্ট, দূতাবাস, সিমেন্ট ও জাহাজ শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ নিরপত্তার জন্য সকল ক্ষেত্রেই গার্ড নেওয়া হচ্ছে। গত দু বছর আগে দূতাবাসের জন্য আমরা কাজ শুরু করি এবং এখন ১৬টি দূতাবাসে আমরা কাজ করছি। এলিট ফোর্সের গাড়ির মাধ্যমেও আমরা বড় ব্র্যান্ডিং করছি। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেও আমাদের ব্যবসার অগ্রগতি করেছি। ওয়েবসাইট, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আমাদের প্রচারণা চালাচ্ছি। ব্যাংক বা বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ ক্যারি এবং এসব গাড়ি জিপিএস-এর মাধ্যমে নজরদারি করা হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকাসহ সারা দেশে কোন হরতাল, রাস্তা অবরোধ বা দুর্ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের ক্লাইন্টদের কাছে এসএমএস-এর মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সম্ভব হলে বিকল্প রাস্তাও বলে দেওয়া হচ্ছে।
প্রিয়.কম: এখানে চেলেঞ্জিং সেবা কি কি রয়েছে?
শরীফ আজিজ: সম্প্রতি আমরা বিশেষায়িত অনুসন্ধানী বিভাগও চালু করেছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি উদ্যোগে ডগ স্কোয়াড সেবা চালু করেছি। ক্লোজ প্রোটেকশন নামের একটি সেবা চালু করেছি। বাংলাদেশে বিদেশি কেউ আসলে তাদের এয়ারপোর্ট থেকে গন্তব্য পর্যন্ত বা গন্তব্য থেকে সেমিনার পর্যন্ত যতদূর গার্ডের প্রয়োজন ততদূর পর্যন্ত সেবা দিচ্ছি। ভারত থেকে বাংলাদেশের সিলেটের একটি সিমেন্ট কারখানাতে ১৭ মাইল দূরত্ব থেকে সরাসরি কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে কাঁচা মাল আসে। বাংলাদেশ অংশে থাকা ১০ মাইল কনভেয়ার বেল্ট আমাদের ১৬০ জন এলিট ফোর্স পাহারা দিচ্ছে। যেসব সমুদ্র এলাকায় জলদস্যুর সমস্যা রয়েছে সেখানে আমাদের বিশেষ ফোর্স দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে বিখ্যাত কোন সুপার স্টার আসলে তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়েও আমরা কাজ করেছি এবং করছি। বাংলাদেশে আসা গুগল বাস বা বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানের নানান ধরণের প্রজেক্টেরও কাজ করছি।
প্রিয়.কম: সিকিউরিটি কোম্পানিতে কম বেতনে চাকরির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। আপনার দৃষ্টিভঙ্গী কি?
শরীফ আজিজ: আমাদের দেশে প্রচুর মানুষ কাজ করছে যাদের খুব সামান্য বেতন পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। যার কারণে এই চাকরিটি আকর্ষণীয় না। মূলত বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী, এয়ারফোর্স এবং নেভিতে কেউ ব্যর্থ হলে সিকিউরিটি কোম্পানিতে আসে। এখানে খুব সামান্য বেতন দেওয়ার কারণে অনেকেই দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এসব দেখে মনে হয়ে মানুষের মূল্য নেই। আমরা নিজেরাও এক সময় কম টাকায় কাজ করলেও ওভার টাইমসহ এখন আমরা ন্যূনতম ৯-১০ হাজার টাকা বেতন দিচ্ছি। এই সংখ্যাও আমাদের কাছে অনেক কম মনে হয়। এসব বিষয়ে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন হওয়া উচিৎ।
প্রিয়.কম: এখানে চাকরির জন্য মানুষ কিভাবে আসে?
শরীফ আজিজ: আমরা আগে নিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতাম। এখন অবশ্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয় না। কারণ আমাদের হাতে যে পরিমাণ চাকরিজীবী রয়েছে তাদের ভাই-বন্ধু আত্মীয়স্বজনরা চাকরির সন্ধান করলে এখানে নিয়ে আসে। এখানে আমরা রেফারেন্সটা ভালো পাই। এই রেফারেন্সের জন্য গার্ড কোম্পানিতে চুরির ঘটনাও অনেক কমে গেছে। আমাদের অফিসের প্রবেশ মুখে একটি রিক্রুটিং সেন্টার খুলেছি। কেউ চাকরির জন্য আসলেই আমরা তাকে ব্রিফ করছি। প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা দিতে একটি একটি কাগজ দিয়ে সেটা পড়তে বলি। জানতে চাই, তারা সিকিউরিটি কোম্পানিতে আসতে চায় কেন? এখানে প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে তাদেরকে ট্রেনিং সেন্টারে পাঠিয়ে দেই। সেখানে তাদের থাকা, খাওয়া থেকে শুরু করে খেলাধুলার ব্যবস্থা রেখেছি। এটাকে ১৫ দিনের জেল বলতে পারেন। আমি সেনাবাহিনীতে ছিলাম বলে নিয়ম শৃঙ্খলার ব্যাপারে একটু বেশি সচেতন আমরা। আর এ জন্য আমাদেরকে প্রাইভেট আর্মিও বলতে পারেন।
প্রিয়.কম: এখানে সব সময় লোক নেওয়া কি অব্যাহত আছে নাকি নির্দিষ্ট সময়ে লোক নেন?
শরীফ আজিজ: আমরা প্রতিনিয়তই লোক নিয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে বাছাই হলে তাদের ট্রেনিং দিয়ে সম্পূর্ণ কাজের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের কর্মক্ষেত্র ঠিক করে দেওয়া হয়।
প্রিয়.কম: মফস্বলের যারা ঢাকায় আসতে চান না তাদের জন্য কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার কোন সুযোগ আছে কি?
শরীফ আজিজ: আমাদের যেহেতু সারা দেশেই অপারেশন চালাতে হয়। এ জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অফিস রয়েছে। সেখান থেকে আমাদের ও চাকরির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
প্রিয়.কম: এখানে চাকরির জন্য কি কি যোগ্যতা দরকার?
শরীফ আজিজ: গার্ডের চাকরি করতে হলে ন্যূনতম ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে, ন্যূনতম ক্লাস-৮ পাশ করতে হবে। এটা হলো সি-ক্যাটাগরির জন্য। এছাড়া বি-ক্যাটাগরির জন্য ৫ ফিট ৮ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে। সাথে ইংরেজি জানতে হবে। এ এবং প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির জন্য শারীরিক যোগ্যতাসহ এইচএসসি পাশ এবং ইংরেজি জানা থাকতে হবে।
প্রিয়.কম: নিরাপত্তাকর্মী কোন কারণে মারা গেলে তাদের জন্য আপনারা কি করে থাকেন?
শরীফ আজিজ: আমরা প্রত্যেকটা কর্মীর বেতন ওভার টাইমসহ সময় মতো দেই। প্রত্যেক কর্মীর জন্য ইনস্যুরেন্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বোনাস, ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশেষ করে কেউ মারা গেলে মৃত দেহ তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি এবং আমরা তাদের পরিবারের হাতে দেড় লাখ টাকা দেই।
প্রিয়.কম: এখানে নারী নিরাপত্তাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন কিভাবে?
শরীফ আজিজ: এলিট ফোর্সে সাড়ে ১৬ হাজার নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে প্রায় এক হাজার নারীও রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৬০০ এবং ঢাকার বাইরে ৪০০ নারী নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করছে। নারীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাদের কখনোই রাতে কোন কাজ দেওয়া হয় না। লেবার ল' অনুযায়ী তাদের জন্য যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজন তার সবগুলোই আমরা দিয়ে থাকি। বিশেষ করে তাদের গর্ভকালীন সুযোগ সুবিধা এবং তাদের মেধাবী ছেলে-মেয়েদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থাও করা হয়। আর কোন অভিযোগ পেলে সে বিষয়ে আমরা দ্রুততর ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
প্রিয়.কম: সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) থেকে কি কি করছেন?
শরীফ আজিজ: সারা দেশেই নানান কাজের জন্য আমরা সিএসআর বিভাগ রেখেছি। জাকাত ফান্ড থেকে প্রতিমাসেই আমরা জাকাত দিচ্ছি। শীতের সময় কম্বল বা বর্ষার সময় ত্রাণ দিচ্ছি। গুলশান-বারিধারার তিনটি মসজিদের জন্য শুক্রবার ফ্রি ট্র্যাফিক সেবা, জাগো ফাউন্ডেশনে পড়ালেখার জন্য সহযোগিতা, গুলশান-বারিধারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ নানান কাজে আমাদে সম্পৃক্ততা রয়েছে।
প্রিয়.কম: সবচেয়ে বড় সফলতা কি?
শরীফ আজিজ: আমরা আন্তর্জাতিক মানের সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেষ্টা করছি। মানুষ, বস্তু ও তথ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করছি। দেশ-বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা কাজ করতে গিয়ে ক্লাইন্ট থেকে ফিডব্যাক পেয়ে আমরা সন্তুষ্ট। অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ওপর বেশি নির্ভরশীল হচ্ছে। আমাদের প্রতি তাদের বিশ্বাসের জায়গা অনেক পাকাপোক্ত হয়ে গেছে দেখে নিজেদেরও অনেক ভালো লাগে।
প্রিয়.কম: সবচেয়ে বড় বাধা কি ছিল?
শরীফ আজিজ: আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা লোকবল না পাওয়া। আবার স্কিল লোকের সন্ধান পাওয়া অনেক কঠিন। এখন আমাদের যে ক্লাইন্ট রয়েছে সে হিসেবে ২০ হাজার গার্ড এখানে চাকরি করলে আমাদের অপারেশন পরিচালনা করা সহজ হয়। কিন্তু এখন সেখানে আমাদের গার্ড রয়েছে সাড়ে ১৬ হাজার। মূলত সামাজিকভাবে গার্ডের এখনও সম্মান দেখানোর জায়গা তৈরি হয়নি। কেউ গার্ডের চাকরি করে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নিজের প্রফেশনের পরিচয় দিচ্ছে না। তবে আমরা তাদের ভালো বেতন দিতে পারলে তারা সামাজিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকতে পারতো। কোন কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে দেয়। এতো অল্প টাকা দিয়ে কাজ করানো যায় না। আমাদের ক্লাইন্ট প্রতিষ্ঠানসহ সকল সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব বিষয়ে নজর দেওয়া উচিৎ।
প্রিয়.কম: সিকিউরিটি ব্যবসায় আপনার সাফল্যের রহস্য কি?
শরীফ আজিজ: যখন এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করি তখন প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে। মতিঝিল পাড়ায় সারাদিন ঘুরতাম। দুপুরের খাবার গাড়িতেই খেতাম। ক্লান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে গাড়িতেই ঘুমিয়ে নিতাম। তবে আমার লক্ষ্য ছিল অটুট। ফলে শেষ পর্যন্ত আমরা ব্যাংকসহ অন্যান্যপ্রতিষ্ঠান গুলোকে আমাদের সক্ষমতা বোঝাতে পেরেছিলাম। আমি নিজের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর আগে দেশের কয়েকজন রাষ্ট্রপতির সাথে কাজ করেছি বলে অনেকেই আমাকে চিনতেন। ফলে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকগুলোর কাছে গিয়ে সিকিউরিটির বিষয়ে প্রস্তাব দিলে তারা আমাকে খুব বেশি সহযোগিতা করেন। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তাদের সহযোগিতার কারণে আমাদের আর পিছিয়ে থাকতে হয়নি।
প্রিয়.কম: বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
শরীফ আজিজ: আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে কোয়ালিটি সম্পন্ন নিরাপত্তাকর্মী তৈরি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিস্তৃতি করা। আমি মনে করি গার্ডদের ন্যূনতম ৩ মাস সিকিউরিটি ট্রেনিং দেওয়া উচিৎ। যেখানে আমরা সেনাবাহিনীর অফিসাররা আড়াই-তিন বছর ধরে ট্রেনিং করি সেখানে ১০/১৫ দিন বা এর চেয়ে বেশি করতে পারি না। এসব সমস্যা থেকে বের হয়ে আরও সুশৃঙ্খল এবং যোগ্যতা সম্পন্ন দক্ষ মানবসেবার জন্য কাজ করে যাবো ইনশাল্লাহ।