
ছবি সংগৃহীত
আসুন থ্রি-ডি কিভাবে কাজ করে জানি, আর উপভোগ করি যার যা আছে তাই নিয়েই, থ্রি-ডি গ্লাস ছাড়াই!!
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১২, ০৬:৩৬
3d নিয়ে আমার আগ্রহ অনেকদিন থেকেই। কিন্তু 3d দেখার জন্য যা যা লাগে বলে জানতাম তা আমার পক্ষে জোগার করা সম্ভব ছিলনা। যাই হোক ঘাটাঘাটি করে কিছুদিন আগে 3d দেখার ৩টি কৌশল জানলাম যার একটি আপনি এক্ষুনি দেখতে পারবেন কোন বিশেষ গ্লাস বা যন্ত্র ছাড়াই। উপায় গুলো বলার আগে আপনাদের 3d কিভাবে কাজ করে তা সম্পর্কে আমি যতটুকু বুঝেছি তা বলছি।
মূল বিষয় হল থ্রি-ডি দেখার জন্য আপনাকে একি সঙ্গে দুই চোখ দিয়ে দুটি দৃশ্য দেখতে হবে, যা পাশাপাশি দুটি ক্যামেরা দিয়ে তোলা হয়েছে। এই দুই ছবির সমন্বয়েই আমাদের মস্তিষ্ক একটি থ্রি-ডি কন্টেন্ট আপনাদের দেখাবে। কিন্তু একই সাথে কিভাবে দুই চোখ দুটি বস্তু দেখবে? এটি দেখানোর জন্য ৩টি পদ্ধতি রয়েছে। আমরা বেশির ভাগই যার একটি সম্পর্কে জানি সেটি সবচেয়ে বেশি খরচ সাপেক্ষ্য। এটি সবচেয়ে নতুন টেকনোলজি এবং সবচেয়ে ভাল এফেক্টও পাওয়া যায়। এর জন্য আপনাদের লাগবে-
পদ্ধতি-১: একটি থ্রি-ডি সাপোর্টেড মনিটর (কমপক্ষে ১২০ হার্টজ ফ্রিকোয়েন্সির), এক্টিভ শাটার থ্রি-ডি গ্লাস এবং থ্রি-ডি কন্টেন্ট। এই টেকনোলজিকে বলে এক্টিভ শাটার থ্রি-ডি টেকনোলজি। এই পদ্ধতিতে মনিটর দুটি ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির ছবি একি সাথে দেখায়, যার ৬০ হার্টজ মিলে হয় একটি ফ্রেম অপর ৬০ হার্টজ মিলে আরেকটি ফ্রেম। এক্ষেত্রে ব্যাটারী চালিত এক্টিভ শাটার গ্লাসটি দুই চোখকে নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি দেখায় আর অন্যগুলো ফিল্টার করে বাদ দিয়ে চোখকে দেখানো থেকে বিরত রাখে, এর ফলে দুই চোখ দুটি ভিন্ন ফ্রেম দেখে যা মস্তিষ্কে থ্রি-ডিতে রূপান্তরিত হয়।
পদ্ধতি-২: দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হল এনাগ্লিফ থ্রি-ডি টেকনোলজি, একে স্টেরিও স্কোপিক থ্রি-ডিও বলে। এই পদ্ধতিটির জন্য দরকার একটি লাল-সাইয়ান, বা লাল-নীল এই দুই রঙের একটি চশমা। কোন নির্ধারিত মানের মনিটর বা ডিসপ্লে এখানে দরকার নেই। শুধু এনাগ্লিফ থ্রি-ডি কন্টেন্ট আর গ্লাস হলেই দেখতে পাবেন। এনাগ্লিফ ছবি বা ভিডিওতে দুই কালারের (লাল-নিল বা সাইয়ান-এর) ফ্রেমকে একি সাথে মার্জ করা হয় কিছুটা দুরত্বে, দুই চোখে আলাদা রঙ নির্ধারিত রঙ-এর ফ্রেম ছাড়া বাকি রঙকে দেখতে দেয়না বা ফিল্টার করে ফেলে। যার ফলে এক্ষেত্রেও একি ফল পাওয়া যায় মানে সেই থ্রি-ডি। এখন আমাদের দেশে এই গ্লাসটি অনেক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। বিসিএস কম্পিউটার সিটি, মাল্টিপ্লান সেন্টার বা ক্লিকবিডি সার্চ করেও এটি পেতে পারেন। মাত্র ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় ই কিনতে পারেন গ্লাস বা চশমাটি। আর ভিডিও বা ছবি পেতে এনাগ্লিফ বা স্টেরিও স্কোপিক থ্রি-ডি লিখে গুগলিং করুন।
আমি এই গ্লাস টি যোগাড় করেছি এবং খুব ভালই উপভোগ করছি, ইমেজ বা ভিডিও থেকে গেমিং এ আরও ভাল ফল পাওয়া যায়। মোটামুটি একটি থ্রি-ডি সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড হলেই থ্রি-ডি গেম আপনার পিসি তে এক্টিভ করতে পারেন। আমি ব্যাবহার করছি nvidia geforce 9500gt যদিও এটিকে থ্রি-ডি গেমিং এর জন্য nvidia রিকোমেন্ড করেনা তারপর ও ভালই কাজ করছে, আর থ্রি-ডি গেমিং এর জন্য 9600gt থেকে এর উপরের যেকোন মডেল কিনতে পারেন।
পদ্ধতি-৩: আর সব শেষে আপনাদের যে পদ্ধতিটির কথা বলব এর জন্য লাগবে যেকোন একটি মনিটর আর থ্রি-ডি কন্টেন্ট। মনিটর তো আপনাদের আছেই আর কন্টেন্ট-এর জন্য তো আছে আমাদের গুগল মামা । এই থ্রি-ডি টেকনোলজির নাম হলো সাইড বাই সাইড থ্রি-ডি বা ক্রস আইড থ্রি-ডি। এই পদ্ধতিতে থ্রি-ডি দেখতে আপনাদের সাইড বাই সাইড থ্রি-ডি ইমেজ বা ভিডিও ডাউনলোড করতে হবে। সাইড বাই সাইড থ্রি-ডি ইমেজ বা ভিডিওতে পাশাপাশি দুটি দৃশ্য থাকে যা আপনাদের ক্রস আই করে দেখতে হবে। এটি বুঝতে একটু সময় লাগে তবে একবার বুঝতে পারলে আর সমস্যা হয়না।
উপরের ছবিটিকে দেখুন ক্রস আই করে (আপনার নাকের দিকে তাকালে সামনের দৃশ্যগুলো দুটি ভাগ হয়ে যাবে এই অবস্থাকে ক্রস আই বলে) যতক্ষন না আপনি দুই ছবির মাঝ বরাবর একটি স্পষ্ট ছবি পাচ্ছেন,ততক্ষন চেষ্টা চালিয়ে যান। ক্রস আই করার মাধ্যমে আপনি পাশাপাশি দুটি ছবিকে একত্রিত করছেন। একবার স্পষ্ট হলে মাঝের ছবিটিতে মনোনিবেশ করুন। আর মাঝের ছবিটিই হলো আপনার থ্রি-ডি ছবি, কি কোন পার্থক্য পাচ্ছেন? খেয়াল রাখবেন আপনি মনিটরের একবারে সামনা সামনি অবস্থানে আছেন কিনা, কোনাকোনি অবস্থান থেকে এই থ্রি-ডি দেখা যায়না।
এখনো যদি ক্রস আই এর ব্যাপারটি বুঝতে না পারেন তবে এই লিঙ্কে গিয়ে টিউটরিয়াল ভিডিওটি দেখুন।
তবে উপোরক্ত ৩টি পদ্ধতির জন্যই আপনাদের দুটি চোখ দরকার। একটি চোখ থাকলে থ্রি-ডি দেখা সম্ভব হবেনা!
আশা করছি পোষ্টি উপকারে আসবে, একটুও ভাল লাগলে লাইক দিন।