
ছবি সংগৃহীত
এমপি কন্যার ‘রাজকীয়’ বাল্যবিয়ে
আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৫:৩২
সংগৃহীত ছবি
(প্রিয়.কম) নিজ উপজেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যেই নিজের মেয়ের বাল্যবিয়ে দিয়েছেন জাতীয় সংসদের এক সদস্য। ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সালাহউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তির মেয়ের ওই বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ ১৫ হাজার অতিথি।
শুক্রবার মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজের দুই মেয়ের বিয়ে দেন সালাউদ্দিন মুক্তি।
এমপির বড় মেয়ে মাসকুরা মীম পায়েল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে গেল বছর এসএসসি পাস করলেও ছোট মেয়ে আফসানা মীম প্রিয়ন্তী সপ্তম শ্রেণি পাস করেছেন। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে দুদক কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান নন্দন ও বাল্যবিয়ের পাত্র ওবায়দুর রহমান কায়সার পুলিশের এসআই পদে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানায় কর্মরত।
গেল ৩১ জানুয়ারি এই উপজেলা পরিষদ মাঠে জমকালো আয়োজনে এমপি নিজেই তার উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করেন। মাত্র ১৫ দিনের মাথায় শুক্রবার একই স্থানে নিজের মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিলেন সেই এমপি।
এমপি সালাহউদ্দিন জাতীয় পার্টি থেকে কোটায় ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। দলের যুগ্ম মহাসচিবও তিনি।
বিয়ের আয়োজনে ১৫ হাজার অতিথির জন্য জবাই করা হয় ৫০০ খাসি। খাবারের মেনুতে ছিল বাসমতি চালের পোলাওসহ মুখরোচক নানা খাদ্য। অনুষ্ঠানের খরচ হয় প্রায় ৪ কোটি টাকা। স্থানীয় এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠসহ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ বিয়ের আয়োজন তদারকি করেন স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট সদস্যরা।
ময়মনসিংহ সদরের গলগণ্ডা এলাকার মিফতাহুল জান্নাত মহিলা মাদরাসার মুতামিম মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এমপি সালাহউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তির মেয়ে প্রিয়ন্তী তার মাদরাসা থেকে গত বছর সপ্তম শ্রেণি পাস করেছে।
মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র মো. শহীদুল হক জানান, আফসানা মীম প্রিয়ন্তীর নামে কোনো জন্ম নিবন্ধন নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এমপি সালাহউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তি জানান, ‘স্থানীয় পৌরসভা থেকে জন্ম নিবন্ধন না নিলেও তার ছোট মেয়ে আফসানা মীমের বয়স ১৮ পেরিয়ে গেছে। তবে বড় মেয়ের চেয়ে ছোট মেয়ে দুই বছরের ছোট বলেও স্বীকার করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বড় মেয়ে মাসকুরা মীম পায়েলের এসএসসির সার্টিফিকেট অনুযায়ী বর্তমান বয়স ১৮ বছর ৫ মাস। বিয়ে রেজিস্ট্রি করা কাজী নুরুল আমিন বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী ছোট মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে বলে এমপি সাহেব জানিয়েছেন। কিন্তু বয়স প্রমাণের কোনো কাগজ দেখাননি।’
প্রিয় সংবাদ/জন/আলম