কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

প্রিয় গন্তব্য: বোটানিক্যাল গার্ডেন, ময়মনসিংহ

আফসানা সুমী
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:২৩
আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:২৩

সবুজ ছায়াঘেরা বাগানটি উন্মুক্ত সকল দর্শনার্থীর জন্য। ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
(প্রিয়.কম): প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে কার না ভালো লাগে? ছুটির দিনে কিংবা অবসর সময়ে নিরিবিলি শান্তিময় ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন হতে পারে চমৎকার একটি গন্তব্য। ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা সম্ভব আবার উদ্যানের সবুজের মাঝে চোখ বুজে বিশ্রামটাও হয়ে যাবে একই সাথে। 
 

ছবি: ড. জিনিয়া রহমান

পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিরল উদ্ভিদের এই সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে। বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদরাজিকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে ১৯৬৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ এবং তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওসমান গণির হাত ধরে ২৪ একর জমি নিয়ে বাগানটি যাত্রা শুরু করে।
 
ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
বোটানিক্যাল গার্ডেনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটিও ঘুরে বেড়ানোর জন্য চমৎকার। সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসটি মন ভালো করে দেবে আপনার। উদ্যানটিকে তিলে তিলে সমৃদ্ধ করেছেন ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তিনি। বিরল এবং বিলুপ্তপ্রায় নানান জাতের উদ্ভিদের সমাহার ঘটিয়েছেন তিনি এই বাগানে। 
 
বোটানিক্যাল গার্ডেন। ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
নাম না জানা অনেক উদ্ভিদের দেখা পাবেন এখানে। ফলের গাছ, ফুলের গাছ আছে অসংখ্য। শিশুদের নিয়ে গেলে তাদের জন্য ভ্রমণটি হতে পারে বিশেষ শিক্ষণীয় এবং মজার। দেশের মূল্যবান উদ্ভিদ প্রজাতি বিশেষ করে বিরল প্রজাতির হার্বজাতীয় ঔষধি ও সুগন্ধি জাতীয় উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য রয়েছে পট হাউজ নামে বিশেষ সংরক্ষণাগার। ঔষধি জোনে রয়েছে ৪৮ প্রজাতির উদ্ভিদ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অশ্বগন্ধা, ব্রাউনিয়া, কর্পুর, আগর, অঞ্জন, অ্যানথেরিয়াম ইত্যাদি। ক্যাকটাস ও অন্যান্য সংবেদনশীল উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য দুটি বড় গ্রিন হাউজ রয়েছে গার্ডেনটিতে।
 
মূল প্রবেশ দ্বার। ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
বিভিন্ন ধরনের ফুলের মধ্যে রয়েছে-জেসিয়া, সিলভিয়া, হৈমন্তি, ক্যামেলিয়া, আফ্রিকান টিউলিপ, ট্যাবেবুইয়া, রাইবেলী, অ্যাস্টার, কসমস, ডায়ান্থাস, রঙ্গণ ইত্যাদি। ফলের মধ্যে রয়েছে- স্টার আপেল, আমেরিকান পেয়ারা, কমলা, আঙুর, প্যাসান ফল এবং বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল।
 
ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে- ডেফল, নাগলিঙ্গম, কালাবাস, কারিলিফ, ফলসা, মনহোটা, পেয়ালা, মাক্কি, বনডুবি, লোহাকাট, উদাল, পানবিলাস, অর্জুন, বয়রা, হরতকি, কাটাসিংড়া, টিকমা, প্যাপিরাস, রাইবেলী, স্ট্যাভিয়া, হিং, পেল্টোফোরাম ইত্যাদি। মোট ৫৫৮টি গাছের প্রজাতি নিয়ে প্রজাতির দিক থেকে দেশে একনম্বর বোটানিক্যাল গার্ডেন এটি।
 
ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
উদ্যানের সময়সূচি:
সপ্তাহের ৭ দিনই গার্ডেনের মূল ফটক খোলা থাকে। শুক্র ও শনিবার সহ অন্যান্য বন্ধের দিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা এবং অন্যান্য দিন দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা  পর্যন্ত গার্ডেনটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। টিকেটের মূল্য জন প্রতি ১০ টাকা। 
 
ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
কীভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতে সময় লাগে তিন ঘণ্টার মত। বাসের ভাড়া পড়বে ১২০-২২০ টাকার মধ্যে। ঢাকার মহাখালী থেকে অনেক বাস ছাড়ে ময়মনসিংহ এর উদ্দেশ্যে। রেলপথে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত মোট ৭ টি মেইল ট্রেন ময়মনসিংহ আসে। এছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩টি লোকাল ট্রেন ময়মনসিংহে আসে।
 
ছবি: ড. জিনিয়া রহমান
 
কোথায় থাকবেন:
ময়মনসিংহ শহরের থাকার মতো উন্নতমানের হোটেল হচ্ছে হোটেল আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল আল হেরা, হোটেল মোস্তাফিজ, সিলভার ক্যাসেল, রিভার প্যালেস। এছাড়াও আরও অনেক হোটেল আছে।
 
সম্পাদনাপ্রিয় ট্রাভেল