জিনসেং একটি শেকড়, যা ব্যবহার করে কোরিয়ানরা পানীয় তৈরি করে। ছবি: সংগৃহীত

জিনসেং চায়ের ৮টি অসাধারণ গুণ

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ২৩:৪০
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ২৩:৪০

(প্রিয়.কম) হার্বাল চা ইদানিং খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যের উপকারে। চা ও কফিতে থাকা ক্যাফেইনের বিভিন্ন ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে অনেকেই ক্যাফেইনবিহীন এসব হার্বাল চায়ের দিকে ঝুঁকছেন।  এর মাঝেই একটি দারুণ উপকারী হার্বাল চা হলো জিনসেং।

জিনসেং একটি শেকড়, যা ব্যবহার করে কোরিয়ানরা পানীয় তৈরি করে।  এই চা শক্তিবর্ধক হিসেবে সমাদৃত। শত শত বছর ধরে কোরিয়ায় এই চা জনপ্রিয়। বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যান্য চায়ের মতো জিনসেং চায়ে কোনো চাপাতা থাকে না। বরং জিনসেং মূল, কিছু ফল ও বাদাম ফুটিয়ে এই চা তৈরি করা হয়। অল্প আঁচে এগুলোকে কয়েক ঘণ্টা ফুটিয়ে তৈরি হয় চা। এতে মধু দিয়ে মিষ্টি করা হয়। তবে বর্তমানে জিনসেং চা গুঁড়ো আকারে পাওয়া যায়। তা গরম পানিতে যোগ করলেই পান করা যায়।

এই চায়ের স্বাদ ও গন্ধ খুবই তীব্র। এ কারণে কেউ কেউ তা পছন্দ করেন, কেউ আবার খুবই অপছন্দ করেন। কোরিয়ায় আবার ছোট-বড় সবাই জিনসেং চা পান করতে অভ্যস্ত। কিন্তু জিনসেং আসলে স্বাস্থ্যের কী কী উপকার করে?

স্বাস্থ্য উপকারিতা

দুই ধরণের জিনসেং পাওয়া যায়। একটি হলো এশিয়ান (চীন এবং কোরিয়া থেকে পাওয়া যায়) এবং অপরটি আমেরিকান। আমেরিকান জিনসেং নিয়মিত খাওয়া যায়, কিন্ত কোরিয়ান জিনসেং লম্বা সময় ধরে সেবন না করাই ভালো। এতে থাকা জিনসেনোসাইডস নামের রাসায়নিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে ধরা হয়। এই রাসায়নিকের রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং ভ্যাসোরিলাক্সেটিভ বৈশিষ্ট্য।

১) ওজন কমানো

জিনসেং চা ক্ষুধা কমায়। এ কারণে তা ওজন কমাতে সহায়ক। তবে এর পাশাপাশি ব্যায়াম এবং ডায়েট করাটাও জরুরী।

২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

জিনসেং চা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিছু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তা প্রমাণিত।

৩) হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে

নারীদের জন্য জিনসেং চা উপকারী কারণ তা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, এন্ডোমেট্রিওসিস এবং এ ধরণের সমস্যাগুলো দূরে রাখে।

৪) মন ও শরীর চাঙ্গা করে

জিনসেং চা পান করার পর মনোযোগ বাড়ে এবং চিন্তাভাবনার ধার বাড়ে বলে দাবি করেন অনেকে।  শরীর থেকে স্ট্রেস কমাতে সক্ষম জিনসেং, এ কারণেই তা মস্তিষ্কের ওপর উপকারী এই প্রভাব রাখে।

৫) হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখে

জিনসেং চায়ে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।  জিনসেং হার্ট রেট কমায় এবং হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের চাহিদা কমায়।  এছাড়া হৃদপেশীর শক্তিও বাড়াতে পারে জিনসেং।  এতে মায়োপ্যাথির ঝুঁকি কমে।

৬) ত্বক ভালো রাখে

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণেই ত্বক ভালো রাখতেও জিনসেং কার্যকরী। এছাড়া ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও তা উপকারী।

৭) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

সাধারণ ঠাণ্ডা, জ্বর দূর করতে জিনসেং চা ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এই চা।

৮) ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে

আমেরিকান ও কোরিয়ান দুই পদের জিনসেংই শরীরের ইনসুলিন রেজিসটেন্স কমায়। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।  যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এই চা উপকারী।

এছাড়াও যৌন স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য কোরিয় পুরুষরা জিনসেং চা পান করে থাকেন।  তবে এটা মনে রাখা জরুরী যে অতিরিক্ত পরিমাণে তা পান করা ঠিক নয়। তাতে দেখা যায় ইনসমনিয়া, অস্থিরতা, বমি, মাথাব্যথা ইত্যাদি। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জিনসেং চা পান শুরু করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিত।

সূত্র: এনডিটিভি

প্রিয় লাইফ/ আর বি