ছবি সংগৃহীত

স্ক্যাবিস প্রতিকার করুন ঘরেই

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০২:৫৫
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০২:৫৫

ফটো সোর্স : www.ihomeremedy.net

(প্রিয়.কম)-খোসপাঁচড়া বা চুলকানি বা স্ক্যাবিস অত্যন্ত সংক্রামক একটি ব্যাধি। মাইট নামক অতিক্ষুদ্র পোকার আক্রমণে স্ক্যাবিস হয়ে থাকে। যাকে Sarcoptes scebiei বলে। এটি মানুষের শরীরে এক মাসের মত বেঁচে থাকতে পারে। এর প্রভাবে সারা শরীরে লাল র‍্যাশ দেখা দেয়, ব্যথা হয় ও চুলকানি হয়। এটি ত্বকের সাথে ত্বকের সংস্পর্শে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। তাই লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। সাধারণত আঙ্গুল, হাঁটু, কনুই, কাঁধ, বগল, স্তনের নীচে, কোমর ও নিতম্ব এলাকা আক্রান্ত হয়। প্রায়ই স্ক্যাবিসকে ত্বকের ইনফেকশন বা অ্যালার্জি ভেবে ভুল করা হয়। মাইট আণুবীক্ষণিক জীব যাকে সহজে দেখা যায়না, এই জন্য পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। খুব সহজে ঘরোয়াভাবে স্ক্যাবিস নিরাময় করা যায়। আসুন জেনে নেই সেই উপায়গুলো।

১। রসুন

রসুন শক্তিশালী অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট যা সত্যিকার ভাবেই মাইটকে অপসারণ করতে পারে। রসুন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। রসুন মাইট দমন করে ও ত্বকে এর কাজকে প্রতিহত করে। ক্রমাগত রসুন লাগানো ও খাওয়ার ফলে স্ক্যাবিস নিরাময় অত্যন্ত কার্যকরী ভাবে হয়। রসুন থেঁতলে রস বের করে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। আভ্যন্তরীণভাবে নিরাময়ের জন্য প্রতিদিন ৩-৪ কোয়া রসুন খান। ৩দিন আক্রান্ত স্থানে রসুন লাগানোর পর ২ দিন বিরতি দিন।তারপর আবার লাগান। কারণ ক্রমাগত রসুন ব্যবহার ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে।

২। নিমপাতা

স্ক্যাবিস নিরাময়ে নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। কারণ নিমপাতায় ছত্রাকনাশক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান আছে। হামানদিস্তায় একমুঠো নিমপাতা নিয়ে ভালো করে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত স্থানটি ভালো করে ধুয়ে নিয়ে পেস্টটি লাগান। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিরাময় প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য নিয়মিত এটি করুন। এক কাপ পানিতে কয়েকটি নিমপাতা দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে নিয়ে এক চামুচ করে দিনে ৩/৪ বার পান করুন। এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ এভাবে পান করুন মাইট ও চুলকানি পুরোপুরি দূর হওয়ার জন্য।

৩। অ্যালোভেরা

এই শীতল জেল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। যা ত্বকের নিরাময় ও পুনরুজ্জীবনের জন্য কাজ করে। এটি ত্বকের উপরিভাগের মাইট অপসারণ করতে পারে। তাজা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। এই ঘন জেল মাইটের কার্যকারিতাকে বন্ধ করে এবং তাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে। ইনফেকশন দূর করার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও কাজ করে অ্যালোভেরা জেল।

টিপস :

·         চুলকানি বা স্ক্যাবিস হলে গরম পানির পরিবর্তে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন।

·         সাবান ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার ত্বকের স্বাভাবিক তেল নষ্ট করে। বেশিরভাগ সাবানে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বকের যন্ত্রণা ও ইনফ্লামেশন বৃদ্ধি করে।

·         যদি চুলকানির জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ সেবন করুন।

·         ওট মিলের পাউডার, বেকিং সোডা ও নারিকেল তেল মিশিয়ে গোসলের সময় ব্যবহার করুন।

·         ম্যাগনেসিয়াম সালফেট বা ইপসম লবণ পানিতে মিশিয়ে গোসল করুন।

·         পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।

·         আক্রান্ত স্থানে বরফ বা ঠান্ডা পানির সেঁক দিলে তাৎক্ষনিক উপশম হয়।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম