
ছবি সংগৃহীত
সহজ ভাষায় বিজ্ঞান-১ (নিউটনের প্রথম সূত্র)
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৩, ১৩:১০
চিত্র ১ মিসেস আয়েশা রহমান তার কলেজপড়ুয়া মেয়ের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, “এই যে নাওয়া খাওয়া ফেলে নিউটনের গতিসূত্র পড়ছিস, আমাকে সূত্রগুলো একটু বুঝা দেখি। বাস্তব জীবনে এগুলোর ব্যবহার কি?” মেয়ে মা’কে সমীকরণ দিয়ে, বিজ্ঞানের কাঠখোট্টা ভাষায় বুঝাবার অনেক চেষ্টাই করলো কিন্তু বিধি বাম, মা বুঝলেন না। শুধু বললেন, “এই বুঝি তোদের বিজ্ঞান? শুধুই হাবিজাবি সমীকরণ?তুই যাই বলিস, এ সবই আসলে ধারণা মাত্র...” চিত্র ২ পদার্থবিজ্ঞান অনার্স প্রথম বর্ষের প্রথম ক্লাস। পরিচয়পর্ব শেষে শিক্ষক জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের মধ্যে কে কে নিউটনের গতিসূত্রগুলো বলতে পারবে?” কমবেশি সবাই গড়গড় করে সূত্রগুলো বলতে পারলো। কিন্তু ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হোঁচট খেলো ৬০-৭০% ছাত্রই। কিংবা নিউটনের গতিসূত্রের কার্যকারিতা সম্পর্কে শিক্ষক কিছু প্যাঁচানো প্রশ্ন করলে অনেকেই উত্তর দিতে পারলো না, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল। প্রশ্ন হচ্ছে- এমনটা কেন? সায়েন্স যিনি পড়েননি, তিনি হয়তো নিউটনের সূত্র নাও বুঝতে পারেন। কিন্তু স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও কোনও শিক্ষার্থী যদি সহজ ভাষায় নিউটনের সূত্রটি ব্যাখ্যা করতে না পারে তাহলে এর কারণ কি হতে পারে? আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, “If you can't explain it simply, you don't understand it well enough” এ প্রসঙ্গে আইনস্টাইনের আরও একটি সুন্দর উক্তি মনে পড়ছে- “If you can't explain it to a six year old, you don't understand it yourself." আমাদের শিক্ষাপদ্ধতির ব্যর্থতা কিংবা শিক্ষার্থীদের অনুধাবন শক্তির দীনতা--- কারণ যেটাই হোক, বর্তমানে দেশের বিজ্ঞানশিক্ষার্থীদের অনেকেরই যে বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণাগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান নেই সেটাই বাস্তব সত্য। যে কারণে আমরা না পারছি সহজ ভাষায় বিজ্ঞান বুঝতে, না পারছি সাধারণ মানুষের বিজ্ঞান-আগ্রহ মেটাতে। ফলশ্রুতিতে জাতি পারছে না সত্যিকার অর্থে বিজ্ঞানমনস্ক হতে। কারণ- ভিত্তিটাই তো আমাদের নড়বড়ে! আর তাই আজ আমার প্রয়াস হবে খুব সহজ ভাষায় নিউটনের প্রথম সূত্রটি আপনাদের সামনে তুলে ধরা। প্রথমে একটি গল্প দিয়ে শুরু করি। আপনার বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়ে নিশ্চয়ই আছে। ছুটির দিনে কি করে আপনার বাচ্চাটি? উম... টিভিতে কার্টুন দেখে? অবশ্য আপনার বা আপনার পরিবারের অন্য কারও হিন্দি সিরিয়াল দেখবার অভ্যাস থাকলে বেচারা বাচ্চাটির অবস্থান নিশ্চয়ই শেষ পর্যন্ত হয় কম্পিউটারের সামনে। ঠিক কি না? অবশ্য কম্পিউটার গেমস বা প্লে স্টেশন হাতে পেলে বাচ্চারা কিন্তু খুশিই হয়, গেমসের ঝোঁকে নাওয়া খাওয়া সব মাথায় ওঠে। বলতে পারেন গেমখেলায় মগ্ন বাচ্চাকে দুপুরের খাবার খেতে ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কমবেশি সব মায়েরই আছে। মিসেস আয়েশার কথাই বলি।কলেজে উঠবার পরও তার ছেলের মাথা থেকে কম্পিউটার গেমসের ভূত নামেনি।ছুটির দুপুরে তো ডাকতে ডাকতে খাবার ঠাণ্ডা হয়ে যায়, তবু ছেলে লাঞ্চ করতে আসে না। তখন আর কি করা, মিসেস আয়েশাকে জোর খাটাতেই হয় ছেলের ওপর।সোজা ছেলের ঘরে গিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করে দেন আয়েশা। তারপর কান ধরে নিয়ে আসেন খাবার রুমে। আচ্ছা, এমন পরিস্থিতিতে আপনি কি করেন?নাকি রাগের চোটে দুএকটা থাপ্পড়ও বসিয়ে দেন বাচ্চার গালে? অবশ্য সন্তান যদি খুব বেশি ছোট হয়, এই যেমন ৩-৪ বছর, তখন থাপ্পড়ে কাজ হয় না, খাবার হাতে মা কে আবার তার পেছন পেছন ছুটতেও হয়। টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে না আসলে বাচ্চা একেবারেই ভাত খেতে চায় না! (হরলিক্সের বিজ্ঞাপনটা মনে আছে তো?) বুঝতে পারছি, আমার বকবকানিতে বিরক্ত হচ্ছেন বড্ড। ভাবছেন বিজ্ঞান শেখাতে এসে বাচ্চা মানুষ করবার জ্ঞান ঝাড়ছি কেন? ভুলে গেছেন বুঝি, বলেছি না, আজ আপনাদের সহজ ভাষায় নিউটনের প্রথম সূত্র শেখাবো। এবং সেটা কিন্তু শিখিয়ে ফেলেছিও ইতিমধ্যে। বুদ্ধিমানরা বুঝতে পেরে গেছেন, আর যারা এখনও বুঝেননি তাদের বলছি- নিউটনের গতিসূত্রের প্রথমটি হল- “বাহ্যিক কোন বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থিরই থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে সরল পথ বরাবর চলতে থাকবে।” অর্থাৎ, একটু স্থূল উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে- মা কোনওরকম জোর না করলে গেমসরত বাচ্চা বসে বসে গেমসই খেলতে থাকবে এবং দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা বাচ্চা দৌড়াতেই থাকবে, খেতে আসবে না! সন্দিহান হচ্ছেন? ভাবছেন,এটা তো জানা কথাই। এটাকে আবার সূত্র বলবার কি হল? জানা কথা বলতেই পারেন। আসলে কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা নিউটনের সূত্রগুলো প্রতি মুহূর্তে জেনে বা না জেনে অবিরত ব্যবহার করে যাচ্ছি। চিরায়ত বলবিজ্ঞান (ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স) এর খুব বেসিক তিনটি সূত্রই নিউটনের গতিসূত্র। সূত্রগুলো সম্পর্কে কমবেশি ওয়াকিবহাল পূর্বেও কেউ কেউ ছিলেন কিন্তু বিজ্ঞানী নিউটনই প্রথম তাঁর ১৬৮৭ সালের ৫ই জুলাইএ প্রকাশিত “ফিলোসফিয়া নেচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমেটিকা” গ্রন্থে এই সূত্রগুলোকে একত্রে এবং যুক্তিপ্রমাণ সহকারে প্রকাশ করেন। চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপনকারী এই সূত্রগুলি “নিউটনের গতিসূত্র” নামে পরিচিত। প্রিন্সিপিয়াকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী বইগুলোর একটি হিসেবে গণ্য করা হয়। গতিসূত্র ছাড়াও এই বইতে স্থান পেয়েছে সার্বজনীন মহাকর্ষ তত্ত্ব এবং কেপলারের গ্রহীয় গতি সম্পর্কিত সূত্রের প্রমাণ। হাস্যকর ব্যাপার এই যে কিছু অজ্ঞ ব্যক্তি এ বিষয়ে নিউটনকে “চোর” বলেও আখ্যায়িত করতে পিছ পা হননি। বেশ কিছু বাংলা ব্লগে এরকম কিছু লেখা আছে, যাতে বলা হয়েছে যেহেতু নিউটনের পূর্বেও এই সূত্রগুলো অনেক দার্শনিক/বিজ্ঞানীই জানতেন, সেহেতু নিউটন নাকি একজন “চোর”। কেউ কেউ তো উইকিপিডিয়ার রেফেরেন্স টেনে বলেছেন যে এরিস্টটল তো নিউটনের বহু আগেই এই কথা বলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়াতে কি লেখা আছে পড়ে শুনাচ্ছি আপনাদেরঃ Aristotle had the view that all objects have a natural place in the universe: that heavy objects (such as rocks) wanted to be at rest on the Earth and that light objects like smoke wanted to be at rest in the sky and the stars wanted to remain in the heavens. He thought that a body was in its natural state when it was at rest, and for the body to move in a straight line at a constant speed an external agent was needed to continually propel it, otherwise it would stop moving. Galileo Galilei, however, realized that a force is necessary to change the velocity of a body, i.e., acceleration, but no force is needed to maintain its velocity. In other words, Galileo stated that, in the absence of a force, a moving object will continue moving. The tendency of objects to resist changes in motion was what Galileo called inertia. অর্থাৎ- এরিস্টটলের মতে,বস্তুকে সমবেগে গতিশীল রাখবার জন্যও তার ওপর অনবরত (continuously) বাহ্যিক বল প্রয়োগ করতে থাকতে হবে। কি, নিউটনের সূত্রের সাথে পার্থক্যটা ধরতে পারছেন? তার আগে গ্যালিলিও এর কথাটি বলি। এরিস্টটলের মতবাদের সাথে তিনি একমত ছিলেন না। গ্যালিলিও এর মতে, “কোনও বস্তুর বেগের পরিবর্তনের জন্য অবশ্যই বাহ্যিক বল প্রয়োগ প্রয়োজন, কিন্তু বস্তুর বেগটি অপরিবর্তিত রাখবার জন্য কোন বাহ্যিক বলের প্রয়োজন নেই।” আপনাদের বুঝানোর জন্য এর আগে যে সহজ উদাহরণটা দিয়েছিলাম, সেটি আবার বলি। আপনার সন্তানকে কম্পিউটার গেমস খেলা বাদ দিয়ে দুপুরের খাবার খেতে আসবার জন্য আপনার জোর/থাপ্পড়/শাসন (বাহ্যিক বল) প্রয়োজন, কিন্তু আপনার সন্তানটিকে মনের আনন্দে গেমস খেলবার জন্য আপনাকে কোনও জোর (বাহ্যিক বলপ্রয়োগ) করতে হয় না, সে নিজে থেকেই মনের আনন্দে গেম খেলতে থাকে (গেম খেলতেও বল প্রয়োগ লাগে, কিন্তু সেটা বাহ্যিক বল মানে আপনার জোরজবরদস্তি না, গেম খেলবার জন্য যে বল খরচ হয় সেটা সে নিজেই খরচ করে)। যে উদাহরণটা দিলাম, তা অবশ্যই স্থূল, তবে এই উদাহরণটি বুঝতে পারলে বৈজ্ঞানিক উদাহরণগুলি বুঝতে কোনও কষ্ট হবে না। কোনও বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হার কে ( সহজ ভাষায় বলতে গেলে বেগ/সময়) ত্বরণ বলে। গ্যালিলিও বললেন ত্বরণের জন্য বল (force) প্রয়োজন। কোনও বল প্রয়োগ না করলে গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীলই থাকবে, থামবে না। আবার সন্দিহান হলেন? হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেককিছুই দেখি যা আপাতদৃষ্টিতে এই সূত্র মানে না বলেই মনে হয়। স্থূল উদাহরণে ফিরে যাই। আপনি জোর না করলে আপনার ছেলে কি সারাজীবন অনবরত গেমস খেলতেই থাকবে? পরীক্ষা করেই দেখুন। হা হা, ভয় পাচ্ছেন বুঝি পরীক্ষা করে দেখতে? ভয়ের কিছু নেই, আপনিও জানেন, আপনার ছেলে সারাজীবন নিশ্চয়ই একটানা গেম খেলবেনা। তাহলে কি নিউটনের সূত্র (বা গ্যালিলিও’র সূত্র যেটাই বলেন) ভুল? না, মোটেও ভুল নয়। আপনার ছেলে আপনার জোর ছাড়াও একটানা গেমস খেলতে পারবে না কারণ আপনি ছাড়াও আরও অনেক প্রভাবক আছে যা আপনার ছেলের উপর জোর খাটাবে। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঘুম, পড়াশুনার চাপ, ক্লান্তি ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোও কিন্তু এক ধরনের “বল-প্রয়োগ”. তাহলে দেখছেন তো, প্রথম সূত্র মোটেও ভুল নয়। স্থূল উদাহরণ ছেড়ে এবার একটু বৈজ্ঞানিক উদাহরণে আসি। মনে করুন আপনি আপনার বাড়ির মেঝেতে একটা উলের গোলা গড়িয়ে দিলেন। গোলাটি গড়িয়ে দেবার মুহূর্তে আপনি কিন্তু আসলে তার উপর একটা বল প্রয়োগ করেছেন, যা গোলাটির বেগের পরিবর্তন ঘটাল (আগে গোলাটি আপনার হাতে স্থির ছিল অর্থাৎ বেগ=০. আপনি গড়িয়ে দেবার পর সে একটা বেগ পেল) এখন গোলাটি ছেড়ে দেবার পরে আপনি তো আর তার উপর বলপ্রয়োগ করছেন না। তাহলে তো নিউটনের সূত্রানুযায়ী উলের গোলাটির অনন্তকাল গড়িয়েই চলার কথা। তা তো হচ্ছে না। কিছুদূর গিয়ে থেমে যাচ্ছে। কেন? কারণ আর কিছুই নয়, মেঝের ঘর্ষণ-বল। উলের গোলা বেচারাকে যে চলতে হচ্ছে মেঝের সাথে ঘষটাতে ঘষটাতে, সেটা ভুললে চলবে কেন! মেঝে মহাশয় বড্ড পাজী, ঘর্ষণ বলের মাধ্যমে গোলাটার বেগ সে অনবরত কমিয়ে দিচ্ছে, ফলে গতি কমতে কমতে গোলা বেচারিও একটা সময় থেমে যেতে বাধ্য হচ্ছে। অর্থাৎ- আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যে নিউটনের সূত্র খাটছে না, কিন্তু আসলে নিউটনের সূত্র ঠিকই পালিত হচ্ছে। আবার চিন্তা করুন, একটা স্থির কাগজের টুকরো আপনি মেঝেতে রাখলেন। কোনও বল প্রয়োগ করলেন না। তাহলে তো নিউটনের সূত্র অনুযায়ী এটার স্থিরই থাকার কথা। কিন্তু স্থির থাকছে না কেন, নড়াচড়া করছে কেন? ভেবে দেখুন তো, কি কারণ হতে পারে? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, বাতাস। বাতাসের ঝাপটা (বল)ই কাগজ বেচারা কে স্থির থাকতে দিচ্ছেনা। অর্থাৎ- নিউটনের সূত্রানুযায়ীই এমনটি ঘটছে! কাগজের জায়গায় যদি একটা ভারী লোহার বল হতো, তাহলে কি সেটা নড়ত? না নড়ত না, কারণ লোহার বলের উপর হাল্কা বাতাসের প্রভাব তাকে গতিশীল করবার জন্য যথেষ্ট নয় (দ্বিতীয় সূত্রে এর কারণ ব্যাখ্যা করা আছে) যে কারণে সেটি স্থিরই থাকছে। তো, এই যে বাহ্যিক বলের অনুপস্থিতিতে স্থির বস্তুর স্থির ও গতিশীল বস্তুর সমবেগে সরলরেখা বরাবর (কৌণিক গতির সূত্র নিয়ে পরে আলোচনা করবো) চলতে থাকবার প্রবণতা গ্যালিলিও এর নাম দেন জড়তা(inertia)। গতিবিদ্যার এই প্রথম সূত্রের ধারণা নিউটনের বহু আগেই গ্যালিলিও দিয়েছিলেন এবং নিউটনের প্রথম সূত্র গ্যালিলিও এর সূত্রেরই পুনঃপ্রকাশ। এবং যারা হাস্যকর ভাবে নিউটনকে “চোর” বলে অভিহিত করেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, নিউটন স্বয়ং কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁর প্রথম সূত্রের ক্রেডিট বিজ্ঞানী গ্যালিলিওকে দিয়েছেন। হ্যাঁ, একথা সত্যি যে পূর্বের অনেক বিজ্ঞানী ও দার্শনিকই জড়তার সূত্র সম্পর্কে অল্প-বিস্তর ধারণা বহন করতেন। অনেকেই (সম্পূর্ণ পৃথকভাবে) জড়তার সূত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন যেমন Thomas Hobbes, René Descartes প্রমুখ। ১৭ শতাব্দীতে দার্শনিক René Descartes এই সূত্রটি ফরমুলেট করে থাকলেও ব্যবহারিকভাবে প্রমাণ করে দেখাতে পারেননি। আসলে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ধারাটিই এরকম।,কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের পেছনে সত্যিকার অর্থে কোনও একক বিজ্ঞানীর হাত নেই। যুগ যুগ ধরে প্রমুখ বিজ্ঞানী একই জিনিস নিয়ে গবেষণা করে আসছেন, কেউ কিছুদূর অগ্রসর হয়ে ব্যর্থ হন, সেই গবেষণাকেই আবার এগিয়ে নিয়ে যান আরেকজন। কেউ আবার পূর্ববর্তী কোনও বৈজ্ঞানিককে ভুল প্রমাণিত করলে বিতর্কে মেতে ওঠেন সবাই। তারপর আবার নতুন তত্ত্বকে মেনে নেন। শতাব্দী পরে হয়তো নতুন কোনও বিজ্ঞানী এসে প্রমাণ করেন যে দুটো তত্ত্বই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সঠিক। বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ধারাটি এরকমই ।পৃথিবীর কোটি কোটি গবেষকের ছোট-বড়-নগণ্য-বৃহৎ সবরকমের গবেষণাই কোনও না কোনও ভাবে কোনও না কোনও সময় কোনও না কোনও বড় আবিষ্কারের পেছনে নীরবে ভূমিকা পালন করে থাকে। সুতরাং যে সব অজ্ঞ মানুষ নিউটনকে “চোর” অভিহিত করে ব্লগ কাঁপানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকেন, তাঁদের উদ্দেশে নিউটনেরই একটা উক্তি দিয়ে শেষ করছিঃ “If I have seen further than others, it is by standing upon the shoulders of giants.” নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র নিয়ে শিগগিরই ফিরে আসবো, অপেক্ষায় থাকুন…
- ট্যাগ:
- লাইফ
- জীবন চর্চা
- বিজ্ঞান