
ছবি সংগৃহীত
ভেসোভেগাল অ্যাটাকঃ কী এবং কেন
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৪, ০৩:৩৫
আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪, ০৩:৩৫
আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪, ০৩:৩৫
(প্রিয়.কম) এই তো কিছুদিন আগে, 'ভোসোভেগাল অ্যাটাক' নামের এক অসুখ হইচই ফেলে দিয়েছিল ফেসবুক আর টুইটারে। কারণ হলো বলিউডের 'শাহেনশাহ্' অমিতাভ বচ্চন কলকাতায় এক সিনেমার শ্যুটিংয়ের সময় হঠাত্ই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ডাক্তারদের কাছে থেকে জানা যায়, তিনি ভেসোভেগাল সিনকোপ সিনড্রোমের শিকার। অসুখের নামটা বেশ ভয়ানক আর খটমটে শোনালেও অসুখ কিন্তু খুব একটা ভয়ানক নয়। তবে নামটা ঘাবড়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। তাই ঘাবড়ে না গিয়ে জেনে নিন, ব্যাপারটা আসলে কী!
ভেসোভেগাল অ্যাটাক কী
ভেসোভেগাল অ্যাটাক হলো এক ধরনের নিউরোকার্ডিওজেনিক সিনকোপ। একটু সহজ করে বলতে গেলে, আমাদের শরীরে এক ধরনের হোমিওস্ট্যাটিক মেকানিজম রয়েছে। শরীর তার স্বাভাবিক অবস্থা থেকে সামান্যতম বিচ্যুত হলেও এই মেকানিজম শরীরকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এর কাজই হলো শারীরিক ভারসাম্য রক্ষা করা। তবে কোনো কারণে যদি এই মেকানিজম ঠিকঠাক কাজ না করে বা এর কাজকর্ম ধীরগতির হয়ে যায়, তখনই এই অ্যাটাক দেখা দেয়। যেমন শুয়ে থাকা অবস্থায় যদি কারো রক্তচাপ স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে, হঠাত্ করে উঠে দাঁড়াতে গেলেই রক্তচাপ আকস্মিকভাবে কমে যেতে পারে। তবে এটি সাধারণত আমরা টের পাই না। এর কারণ এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে শরীরের হোমিওস্ট্যাটিক মেকানিজম এই সামঞ্জস্যটি ধরে রাখে। তবে কোনো কারণে এই মেকানিজম ঠিকঠাক কাজ না করলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে পারবে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই মাথা ঘুরে যাবে। এই সমস্যারই ডাক্তারি পরিভাষার নাম হলো ভেসোভেগাল অ্যাটাক। বয়স্ক বা কম বয়সী, যে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যাদের বয়স হওয়ার কারণে নার্ভ শিথিল হয়ে গিয়েছে, তাদের ঝুঁকি বেশি। ভেসোভেগাল অ্যাটাকের সাথে স্ট্রেসেরও একটা যোগাযোগ রয়েছে। ঘুমের অভাব, কোনো ট্রমাটিক অভিজ্ঞতার কারণেও এটি হতে পারে। হঠাত্ করে কোনো কারণে যদি খুব দুঃখ পান, শকড হন, তাহলেও এরকম সমস্যা হতে পারে।লক্ষণ
এ অসুখের মূল লক্ষণই হলো মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া। ভেসোভেগাল অ্যাটাকের লক্ষণগুলো খুবই সাধারণ। মাথা ঘুরে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দুর্বল বোধ করা ইত্যাদি বেশ কিছু লক্ষণ আরো অনেক অসুখেই থাকে। আবার সেভাবে কোনো অসুখ না থাকলেও এসব সমস্যা হতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা গেলেও ভেসোভেগাল অ্যাটাকের কথা মাথায় আসে না। রক্ত দেখে মাথা ঘুরে যাওয়া, ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে মাথা ঘুরে যাওয়া, অনেকক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থাকলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া - এসব যেকোনো কিছু হতে পারে ভেসোভেগাল অ্যাটাকের লক্ষণ। দুর্বল বোধ করা, চোখে ঝাপসা দেখা, সাময়িকভাবে কানে শুনতে না পাওয়া ইত্যাদি এর প্রাথমিক লক্ষণ।চিকিত্সা
সাধারণভাবে ভেসোভেগাল সিনকোপ খুব একটা মারাত্মক নয়। তবে ম্যালিগন্যান্ট ভেসোভেগাল সিনকোপ কিন্ত একটু জটিল। খুব অল্প কিছুতেই রক্তচাপ কমে যাওয়া বা হার্টরেট কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। রোগীরা ঘনঘন অজ্ঞান হয়ে যান। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এই রোগটি নির্ণয় করতে চিকিত্সকরা সিটি স্ক্যান করিয়ে থাকেন। তবে সিটি স্ক্যানে এই অসুখটি সঠিকভাবে ধরা নাও পড়তে পারে। অনেক সময় ঘাড়ের কাছে ইসিজি করে দেখা হয় রোগীর পালস রেট কমে যাচ্ছে কিনা। তবে রোগী ম্যালিগন্যান্ট ভেসোভেগাল অ্যাটাকের শিকার কিনা তা জানা সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কার্ডিয়াক টিল্ট টেবল টেস্ট।সতর্কতা
ভেসোভেগাল অ্যাটাকের রোগীদের তো বটেই, সবারই কিছু ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করে চলা উচিত। থাকুন কিছু বিষয়ে সতর্ক - * অতিরিক্ত স্ট্রেস ভেসোভেগালে অ্যাটাকের জন্য দায়ী। তাই চেষ্টা করুন নিজেকে স্ট্রেস থেকে দূরে রাখার। * দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না। রোদে দাঁড়িয়ে থাকলে সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। * ঘুম থেকে ওঠার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। বসা বা শোওয়ার সময় শারীরিক অবস্থান ঠিক রাখুন। * প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। বিশেষ করে ব্যায়াম করার পরে বেশি করে পানি বা পানীয় পান করুন। * মাথায় বেশি রোদ লাগাবেন না। রোদে বের হতে হলে ছাতা ব্যবহার করুন। তথ্যসূত্র: ডা. সুব্রত মৈত্র, সানন্দা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২
১২ মিনিট আগে
১৪ মিনিট আগে
১৭ মিনিট আগে
১৭ মিনিট আগে
১৮ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ২৫ মিনিট আগে
১৮ ঘণ্টা, ৯ মিনিট আগে
১৮ ঘণ্টা, ১১ মিনিট আগে
১৮ ঘণ্টা, ১৩ মিনিট আগে
১৮ ঘণ্টা, ১৩ মিনিট আগে
১৮ ঘণ্টা, ৩০ মিনিট আগে
২১ ঘণ্টা, ৩২ মিনিট আগে