ছবি সংগৃহীত

চিহ্নিত ২০০ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:১৬
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:১৬

(প্রিয়.কম) ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ২০০ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের আহ্বায়ক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থে স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।

তালিকার রয়েছেন একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, পাঁচজন মেজর জেনারেল, পাঁচজন কর্নেল, ২০ জন ব্রিগেডিয়ার, ৩৯ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ৪৫ জন ক্যাপ্টেন, ৮১ জন মেজর, দুজন লেফটেন্যান্ট, তিনজন বিমানবাহিনীর ও তিনজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের জন্য বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে স্পিকারকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

শাহজাহান খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধপরাধী পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার বিচারের দাবি ও তাদের প্রতীকী বিচারের যে কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে তা পর্যায়ক্রমে সফলতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে আজ আমরা সেই ’৭১-এর হানাদার নরপশু পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনা কর্মকর্তাদের তালিকা আপনাদের মাধ্যমে জনগণের সামনে প্রকাশ করছি। আমরা ইতোমধ্যে অপরাধীদের তালিকা সংগ্রহ ও তৈরি করতে গিয়ে পূর্বঘোষিত ১৯৫ জন সেনা কর্মকর্তার সাথে পাকিস্তান বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর আরও ৫ জন কর্মকর্তার সন্ধান পেয়েছি। এর ফলে ১৯৭১ সালে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তান সেনা সদস্যদের সংখ্যা হলো ২০০ জন।’

নৌমন্ত্রী বলেন, ‘এই তালিকার মধ্যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনাগুলির নীল নকশা প্রণয়ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেতৃত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত ৬৮ জন, জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক সকল যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করে সরাসরি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয় ১১৮ জন, ব্যাপক গণহত্যায় অংশ নেয় ১৪ জন। এই ১৪ জনের মধ্যে পাকিস্তান নৌবাহিনীর ৩ জন এবং বিমানবাহিনীর ৩ জন কর্মকর্তা রয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, “আমাদের আন্দোলনের ও দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ উল্লিখিত পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনাদের বিচারের প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই, সেই সাথে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গঠিত তথ্য সংগ্রহ কমিটিকে আমাদের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

মন্ত্রী আরো বলেন, “আমাদের আরেকটি সুনির্দিষ্ট দাবি- মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, নির্যাতন ও গণআন্দোলনের অবমাননা বা অস্বীকার করে, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ও শহীদদের অপমান করে বক্তব্য প্রদানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের ‘জেনোসাইড ডিনায়াল ল’-এর আদলে আইন প্রণয়ন করা। এই আইন প্রণয়নের ঘোষণা ইতিমধ্যে আইনমন্ত্রী দিয়েছেন। আমরা এই পদক্ষেপকে আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় বলে মনে করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ‍যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী ও কামাল পাশা চৌধুরী, সহ-সদস্য সচিব কামরুল আলম সবুজ, সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মিয়া, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, মুক্তিযোদ্ধ এম ফরিদুজ্জামান খান, মোখলেসুর রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ প্রমুখ।