ছবি সংগৃহীত
কলিজার দো-পেঁয়াজা
আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, ০৮:১৭
মুচমুচে গরম পরোটা কিংবা ধোঁয়া ওঠা ভাতের সাথে ঝাল ঝাল ভুনা কলিজা... ভাবতে গিয়ে অনেকেরই জিবে পানি চলে আসবে নিঃসন্দেহে। তবে কেবল স্বাদে অনন্য বলে নয়, বাংলাদেশের খাদ্য সম্ভারে কলিজার গুরুত্ব আছে তার অসধারন পুষ্টিগুণের জন্য-ও। চলুন জেনে নেয়া যাক কলিজা সম্পর্কে কিছু জরুরি কথা। উপকারিতা- রক্ত তৈরির জন্য জরুরি উপাদান হলো আয়রন। এই আয়রন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে গরু বা ছাগলের কলিজায়। বড় কোনো অপারেশনের পরে, প্রচুর রক্তক্ষরণের পর, গর্ভাবস্থায়, সন্তান জন্মদান বা মাতৃদুগ্ধদানকালীন কলিজা যথেষ্ট উপকারী। শিশু থেকে ৩০-৩৫ বছর বয়স্ক মানুষের জন্য যথেষ্ট দরকারী হলো কলিজা। এতে ভিটামিন ‘এ’, আমিষ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ। এই উপাদানগুলো দেহের বর্ধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি-সিক্সেরও বসতি কলিজায়। শীতকালীন ঠান্ডা-কাশির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কলিজার ভিটামিন ‘এ’। আমাদের শরীরের শিরা-উপশিরার ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়। এই শিরা- উপশিরার দেয়ালকে প্রসারিত করে কলিজার কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামের উপকরণ। সেলেনিয়াম নামের আরও একটি জরুরি উপাদানের বসবাস এই কলিজায়। সেলেনিয়াম হ্রাস করে কোলন ক্যানসারের পরিমাণ, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি, ইনফেকশন, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা, কৃমির পরিমাণ। ঠান্ডাজনিত জ্বরে, টনসিলাইটিস, সর্দি সৃষ্টিকারী ভাইরাস নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে জিংক। কলিজায় রয়েছে মাত্রাধিক জিংক। তাই ছোটদের জন্য মুরগির কলিজাও উপকারী। যে ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ- উচ্চ রক্তচাপ, চল্লিশের ওপরে বয়স, ডায়াবেটিক ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি—এমন ব্যক্তিদের জন্য কলিজা বাদ দেওয়াই উত্তম। তবে হূৎপিণ্ডের বাইপাস সার্জারি বা রিং পরানো, উচ্চ রক্তচাপজনিত রক্তক্ষরণের পরে কলিজা খাওয়া অনুচিত। কারণ, এতে দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এবার জেনে নেয়া যাক কলিজা রান্না করবার শতভাগ দেশী একটি রেসিপি- উপকরণ: খাসি/গরু/মুরগির কলিজা ৫০০ গ্রাম, আলু ৪টি (মাঝারি), পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, এলাচ ৪টি (থেঁতো করা) দারচিনি ৩ টুকরা, তেজপাতা ২টি, ভাজা জিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো। প্রণালি: প্রথমে কলিজা হলুদ লবণ দিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। অনেকেই অভিযোগ করেন একটি বোটকা গন্ধের। রান্নার পূর্বে সিদ্ধ করে নিলে এই গন্ধটি দূর হয়ে যাবে পুরোপুরি। সিদ্ধ করার পর ডুমো করে কেটে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। আলু ডুমো করে কেটে হলুদ ও লবণ মাখিয়ে লাল করে ভেজে তুলে রাখতে হবে। প্যানে তেল দিয়ে গরম মশলা দিতে হবে। এবং ১ কাপ পেঁয়াজ বেরেস্তা করে নিতে হবে। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে ভাজা জিরার গুঁড়া ছাড়া বাকি সব মসলা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে। মসলা কষানো হলে কলিজা মসলায় দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে ঢেকে দিতে হবে। সেদ্ধ হলে ভাজা জিরার গুঁড়া ছড়িয়ে দিয়ে আরও খানিকটা সময় দমে রাখতে হবে। তেল ভেসে উঠলে গরম গরম পরিবেশন যোগ্য। তথ্যসূত্র- ইন্টারনেট ফটো ক্রেডিট ও রেসিপি- রন্ধন ইশকুল