স্ত্রী হত্যা: স্বামীর ফাঁসি
রাজশাহীতে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে স্বামী আয়নাল হককে (৩২) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওএইচএম ইলিয়াস হোসাইন এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণাকালে আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এহসান আহম্মেদ শাহীন জানান, ঘটনার পর ঘাতক আয়নালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলা চলাকালে মোট ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুপুরে এই রায় ঘোষণা করা হয়। বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ই এপ্রিল রাজশাহী মহানগরের উপকণ্ঠে থাকা বায়ার ভোলাবাড়ি এলাকায় স্বামীর হাতে স্ত্রী সাফিয়া খাতুন (২৩) খুন হন। মহানগরের শাহ মখদুম থানা পুলিশ ওই এলাকা থেকে সাফিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়ে ঘাতক স্বামী আয়নালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ওইদিন সকালে আয়নালের স্ত্রী সাফিয়া বাড়ির পাশে গরুর গোবর দিয়ে নোন্দা (জ্বালানি) তৈরির কাজ করছিলেন। এ সময় আয়নাল ছুরি হাতে সাফিয়ার ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। ঘটনাটি দেখে আয়নালের বড় ভাই মৃত বাবুর স্ত্রী সোমা (২৫) বাঁচাতে ছুটে আসেন। এতে তার ছুরিকাঘাতে সোমাও আহত হন। পরে স্থানীয়রা সোমাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং আয়নালকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এর ১০ বছর আগে রাজশাহীর পবা উপজেলার মদনহাটি গ্রামে জয়নালের মেয়ে সাফিয়ার সঙ্গে আয়নালের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৮ বছরের সাগর নামে এক সন্তান আছে। ঘটনার প্রায় দুই বছর আগে থেকে আয়নাল প্রায়ই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতেন। তুচ্ছ ঘটনায় সাফিয়ার ওপর নির্যাতনও চালাতেন। ওইদিন সকালে হঠাৎ করেই আয়নাল এ ঘটনা ঘটায়।